বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিটের চিকিৎসক সংকট আর প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন করোনায় আক্রান্ত রোগীরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে তার সবটুকু দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, এই হাসপাতালে ১৬ বেডের আইসিইউ ইউনিটের জন্য চিকিৎসক থাকার কথা দুই শিফটে ২৪ জন, সেখানে বর্তমানে রয়েছেন ৯ জন। অন্যদিকে আইসিইউ বেডের ১৬টির মধ্যে মনিটরের মধ্যে সচল রয়েছে ১০টি।

এছাড়াও ভেন্টিলেটর সচল ৮টি। এই ওয়ার্ডে গুরুতর করোনা রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এই স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসব আর প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাব থাকায় রোগীদের সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে।

ফরিদপুর জেলার নয় উপজেলায় ২০ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এ জেলা ছাড়াও বৃহত্তর ফরিদপুরের অনেক মানুষের চিকিৎসার আশ্রয়স্থল ৫১৭ বেডের এই হাসপাতালটি।

ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপে ফরিদপুরে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ৭ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৭৭ জন। মারা গেছেন ১৭ জন।

জেলায় এ পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ১৩৭ জন। বর্তমানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৫৬৮। এর মধ্যে শুধু সদর উপজেলাতেই রয়েছে ৫ হাজার ৭৬১ জন। আর মারা গেছেন ৯২ জন।

এতো সমস্যার পরেও নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন ওয়ার্ডের নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আইসিইউ ওয়ার্ডের সেবিকা জুথিকা বিশ্বাস বলেন, করোনার সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের সেবা দেওয়া হয় এই ওয়ার্ডে, আমরা সবাই সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। স্বল্প সংখ্যক জনবল আর যতটুকু চিকিৎসা সরঞ্জামাদি রয়েছে তা দিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

আইসিইউ ওয়ার্ডের ইনচার্জ ডা. অনন্ত কুমার বিশ্বাস হাসপাতালের নানান সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, আইসিইউ ওয়ার্ডের করোনা রোগীর চাপ অনেক বেশি। সেই তুলনায় চিকিৎসক সংকট রয়েছে। এছাড়াও করোনার অন্য ওয়ার্ডগুলোরও একই অবস্থা।

তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে চিকিৎসক, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, মনিটর ও ভেন্টিলেটর পেলে আমরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারব।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান জানান, হাসপাতালের ২৫০ বেড করোনা ডেডিকেটেড হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আইসোলেশন, আইসিইউ ও সাধারণ ওয়ার্ড রয়েছে।

তিনি আরও জানান, এই হাসপাতালে শুধু ফরিদপুর নয়, পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর করোনা রোগীর সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে রোগী বাড়ছে, প্রতিদিনই আইসিইউয়ে রোগীদের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আসন না থাকায় বাধ্য হয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আরও চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠিয়েছি।

বি কে সিকদার সজল/এমএসআর