পাবনায় ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আলো জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় অন্তরা খাতুন নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় সিভিল সার্জন গঠিত তদন্ত কমিটি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে তদন্ত কমিটি আলো জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।
এ সময় অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক হাসপাতালের মালিক ডা. মাসুমা আঞ্জুমা ডানা এবং তার স্বামী ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের বক্তব্য শোনেন তারা। পরে ভুক্তভোগী প্রসূতির স্বামী, শাশুড়ি ও মাসহ স্বজনদের বক্তব্য শোনেন এবং লিপিবদ্ধ করেন।
বিজ্ঞাপন
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে আছেন কনসালটেন্ট ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস, আব্দুল হাই, ডা. শামীমা সুলতানা পলি (গাইনি) ও ডা. মো. জহির (অ্যানেস্থেটিস্ট)।
এ বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করেও অভিযুক্ত ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আর ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী ফজলে রাব্বী বলেন, তদন্ত কমিটি আমাদের ডেকেছিল। আমরা আমাদের বক্তব্য ও প্রমাণ উপস্থাপনা করেছি। আশা করি আমরা ন্যায়বিচার পাব এবং দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবেন।
বিজ্ঞাপন
তদন্ত কমিটির প্রধান পাবনার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে বিষয়টি জানাতে পারব। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্তের দায়িত্বে থাকা সকলের রিপোর্ট নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দেওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ফজলে রাব্বির গর্ভবতী স্ত্রী অন্তরা খাতুনকে আলো জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই সন্ধ্যায় হাসপাতালের মালিক ডা. মাসুমা আঞ্জুমা ডানা এবং তার স্বামী ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের তত্ত্বাবধানে অন্তরার সিজার করা হয়। অপারেশনের পরপরই রোগীর অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ার হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে তার মৃত্যু হয়।
স্বজনদের অভিযোগ, অ্যানেস্থেসিয়া ভালোভাবে করা হয়নি। চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় বুধবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন তারা। দুপুর ১২টার দিকে ফজলে রাব্বির নিজ বাড়ি সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে আলো জেনারেল হাসপাতালের সামনে গিয়ে মানববন্ধনের চেষ্টা করা হয়। এ সময় আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক কর্মচারীর নেতৃত্বে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা করেন এবং মারধর করেন। পরে ঈশ্বরদী থানা ও ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।
ওই দিন বিষয়টি পাবনার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ানের নজরে আসলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালটি সাময়িকভাবে বন্ধে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন এবং তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
রাকিব হাসনাত/আরএআর