কুষ্টিয়ায় মহান আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টির জন্য নামাজ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড খরা থেকে রেহাই পেতে আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় করা হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নামাজ আদায়ের পর বিশেষ মোনাজাত করেন।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকালে বৃষ্টির জন্য উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মাঠে দুই রাকাত ইসতেস্কার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ এই নামাজে ওই গ্রামের শতাধিক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। নামাজ শেষে বৃষ্টির জন্য বিশেষ মোনাজাত করেন তারা।

কুষ্টিয়ার মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে; নদী ও খালের পানি বৃষ্টির অভাবে তলানিতে ঠেকেছে। অনেক দিন বৃষ্টি না হওয়ায় বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন তারা।

বৃষ্টির জন্য ইসতেস্কার নামাজের পর মোনাজাতে তারা বার বার বলতে থাকেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি বৃষ্টি দান করেন।’ ‘হে আল্লাহ, আপনি বৃষ্টি দান করেন।’ ‘হে আল্লাহ, আপনি বৃষ্টি দান করেন।’

নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন চরজগন্নাথপুর গ্রামের জামে মসজিদের ইমাম ইদ্রিস আলী। তিনি বলেন, কুষ্টিয়ায় কয়েক মাস ধরে বৃষ্টি হয় না। তাই আমরা দোয়া করেছি। বৃষ্টি না হওয়ায় তাপদাহে দেশের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আল্লাহর দরবারে পানি প্রার্থনা করে দোয়া করা সুন্নত।

মুসল্লিরা বলেন, আল্লাহ সৃষ্টির কল্যাণে আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। কোরআনের অনেক জায়গায় আসমান থেকে পানি বর্ষণের কথা উল্লেখ আছে। বৃষ্টির পানি বর্ষণের মাধ্যমে আল্লাহ মানুষের জন্য রিজিকের ফয়সালা করেন।

স্থানীয়রা বলেন, এ বছর অনাবৃষ্টি কারণে মানুষ নাজেহাল হয়ে পড়েন। প্রচণ্ড গরম পড়ছে, মানুষের কষ্ট হচ্ছে, ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এ জন্য সৃষ্টিকর্তার দরবারে বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করা হয়। আল্লাহর শরণাপন্ন হলে তিনি বিপদ-আপদ, দুঃখকষ্ট, বালা-মুসিবত অবশ্যই দূর করে দেন।

দুনিয়ায় আল্লাহর অজস্র কুদরত ও নিদর্শনের মধ্যে বৃষ্টি এক বিশেষ নিদর্শন। বৃষ্টি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। বৃষ্টি আল্লাহর খাস রহমতের নিদর্শন।

বৃষ্টি প্রসঙ্গে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি (আল্লাহ) যিনি তার রহমতের (বৃষ্টির) প্রাক্কালে বাতাসকে সুসংবাদ বাহকরূপে প্রেরণ করেন। যখন তা ঘন মেঘ বহন করে তখন আমি (আল্লাহ) তা নির্জীব ভূখণ্ডের দিকে চালনা করি। পরে সেটা হতে বৃষ্টি বর্ষণ করি। তারপর তার দ্বারা সব ধরনের ফল-ফসল উৎপাদন করি।’

হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃষ্টি প্রার্থনার সময় বলতেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি তোমার বান্দাকে এবং তোমার পশুদের পানি দান কর। আর তাদের প্রতি তোমার রহমতের বর্ষণ কর এবং তোমার মৃত জমিনকে জীবিত কর।’

রাজু আহমেদ/এমএসআর