নিঝুমদ্বীপে পর্যটকদের মন কাড়ছে খেজুর গুড়ের জিলাপি
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপে শীতের মৌসুমের অন্যতম আকর্ষণ হলো খেজুরের গুড়। এর মিষ্টি গন্ধে ম-ম করে যেন চারপাশ। শীতের সকালে খেজুরের গুড়ের তৈরি পিঠার থেকে লোভনীয় আর কী হতে পারে! পিঠা তো অনেক রকমের হয়, খেজুরের গুড় দিয়ে যে জিলাপিও তৈরি করা যায়, সেকথা কি জানেন! খেজুরের গুড়ের জিলাপি নিঝুমদ্বীপে আসা পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে।
জানা গেছে, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের গুচ্ছ গ্রামের সালাউদ্দিনের বাড়ির সালাউদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ হেজু তিন বছর ধরে শীতকালে গুড়ের জিলাপি বিক্রি করেন। বিকেল হলেই তার আল্লাহর দান হোটেলের সামনে পর্যটকদের ভিড় লেগে যায়। সারা দেশে চিনির জিলাপি পাওয়া গেলেও এখানে পাওয়া যায় খেজুর গুড়ের জিলাপি। গুড়ের জিলাপি স্বাদ নিতে অনেকেই এখানে আসেন।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জিলাপি কিনতে আসরের নামাজের পর রীতিমতো লাইনে দাঁড়িয়ে আছে লোকজন। কড়াই থেকে জিলাপি তোলার ফুরসত পান না মোহাম্মদ হেজু। জিলাপি তৈরি করতে তেল, ময়দা, গুড় প্রয়োজন হয়। ময়দা দিয়ে জিলাপি বানিয়ে এরপর তেলে ভেজে গুড়ের শিরায় ভিজিয়ে তুলে নিতে হয়। তবে গুড়ের জিলাপির চাহিদা অনেকটাই বেশি থাকায় এ সময়ে সব থেকে বেশি কাজের চাপে থাকতে হচ্ছে তাকে।
বিজ্ঞাপন
মুন্সীগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা মোহাম্মদ মুয়াজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গুড়ের জিলাপির স্বাদটা খবই ইউনিক। এই রকম স্বাদ সচরাচর পাওয়া যায় না। গুড়ের জিলাপি কখনো খাইনি, এখানেই প্রথম খেলাম। খুবই ভালো লেগেছে। দাম নাগালের মধ্যে। মাত্র ৫ টাকা। সে অনুপাতে খুবই ভালো।
ওমর ফারুক নামের আরেক পর্যটক ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বাদটা চিনির সঙ্গে মেশালে হবে না। চিনির জিলাপির স্বাদ কিছুটা মাইল্ড হয় আর গুড়ের টেস্ট অনেক স্ট্রং। গুড়ের পুরো ফ্লেবার আসছে জিলাপিতে। খুব ভালোই লাগছে।
নিঝুমদ্বীপের বাসিন্দা মো. আরিফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিঝুমদ্বীপে খেজুরের গুড়ের জিলাপি পাওয়া যায়। এ জিলাপিটা অনেক মজার। ঘুরতে আসলে সবাই অন্তত এক পিস হলেও খায়। অনেকে জিলাপি ও খেজুরের গুড় নিয়ে যায়। আমাদের এখানে খাঁটি গুড় পাওয়া যায়। তাই গুড়ের তৈরি জিলাপি পর্যটকরা পছন্দ করে।
জিলাপি বিক্রেতা মোহাম্মদ হেজু ঢাকা পোস্টকে বলেন, খাটি গুড়ের জিলাপি আমি আজ তিন বছর ধরে বানাচ্ছি। পর্যটকরা খুব পছন্দ করেন। অনেকে ফিরে যাওয়ার সময় সঙ্গে নিয়ে যান। মানুষ খুব ভালোবাসে এই জিলাপিকে। আমাদের এই অঞ্চলের মানুষেরও পছন্দ গুড়ের জিলাপি। ৫ টাকা পিস হওয়ায় সবার সাধ্যমতো খেতে পারে এবং নিয়ে যেতে পারে। স্বাদ ও গুণে ভালো হওয়ায় দিনদিন চাহিদা বাড়ছে।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. কেফায়েত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, খেজুরের গুড়ের জন্য নিঝুম দ্বীপ বিখ্যাত। বাণিজ্যিকভাবে এটি ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। হেজু ভাইয়ের দোকানে সন্ধ্যাবেলায় খেজুরের গুড় জিলাপি বেশি বিক্রি হয়। খেতে মানুষ খুবই তৃপ্তি পায়। পর্যটকরা পছন্দ করায় এখানে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছি। আশা করি আগামীতে খেজুরের রস ও গুড় বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে পর্যটকদের সংখ্যা আরও বাড়বে।
হাসিব আল আমিন/এএএ