রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে রেলমন্ত্রী করেছেন। আগে রেলের কী দুরাবস্থা ছিল আপনারা জানেন। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে রেলকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছিল। সমস্ত দক্ষ জনশক্তি বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। আমি মন্ত্রী হওয়ার পরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রেল কারখানা সৈয়দপুরে গিয়েছিলাম। যেই কারখানায় ২ হাজার ৮০০ লোক কাজ করার কথা সেখানে মাত্র সাড়ে ৮০০ লোক কাজ করছে।

শনিবার (২ মার্চ) বিকেলে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে গণসংবর্ধনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রেলপথমন্ত্রী বলেন, স্টেশন মাস্টারের অভাবে আমাদের অনেক স্টেশন বন্ধ রয়েছে। আমাদের দক্ষ লোকেমোটিভ ড্রাইভারের অভাব। আমরা জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালাচ্ছি। এর থেকে উত্তরণের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমস্ত জনশক্তি ও সমস্ত কর্মচারীর অভাব পূরণ করার জন্য নিয়োগের ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন। আমাদের রেল বিভাগকে আবার সচল করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন প্রত্যেকটি জেলায় রেল সংযোগ দিতে হবে। রেললাইন স্থাপন করতে হবে। কারণ রেল হচ্ছে সবচেয়ে সস্তা, আরামদায়ক ও নিরাপদ যাত্রার বাহন।

জিল্লুল হাকিম বলেন, আমি গতকাল যখন ট্রেনে ঢাকা থেকে রাজবাড়ীতে আসলাম, তখন আমি ট্রেনের প্রত্যেকটি কম্পার্টমেন্টে গিয়েছি। প্রত্যেকটি যাত্রীর সাথে কথা বলেছি। তারা বর্তমান অবস্থায়ও আরামদায়কভাবে ট্রেন যাত্রা করছে, তারা খুশি। তারা আরও সুবিধা চায়, আরও সম্প্রসারণ চায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আমরা রেলের আরও উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করবো ইনশাআল্লাহ। আমি আশা করি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে আমরা প্রত্যেক জেলায় জনশক্তি নিয়োগ করে, বগি আমদানি করে, ইঞ্জিন আমদানি করে রেলকে সম্প্রসারিত করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, রেলের অনেক জায়গা-জমি বেহাত হয়ে আছে। আমি বলেছি যারা জমি বেআইনিভাবে দখল করে আছে, তারা আইন মেনে লিজ নিয়ে সেখানে থাকেন আমার আপত্তি নেই। কিন্তু বেআইনিভাবে ভোগ করা যাবে না। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি রেলের বেহাত হওয়া জমিগুলো উদ্ধার করার জন্য। রাজবাড়ী এক সময় রেলের শহর ছিল মনে আছে আপনাদের? আমি আপনাদের সামনে ঘোষণা দিতে চাই রাজবাড়ীকে আবার রেলের শহর হিসেবে গড়ে তুলব। 

জিল্লুল হাকিম বলেন, বিএনপির আমলে রাজবাড়ীর ভাটিয়াপাড়া রেললাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর আবার ভাটিয়াপারা রেললাইন চালু করা হয়েছে। এখন টুঙ্গিপাড়ায় ট্রেন যায়। নলিয়াগ্রামে ইতোমধ্যে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন থামানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ করা হয়েছে। আরও কাজ হবে ইনশাআল্লাহ। বালিয়াকান্দি উপজেলার সাথে সরাসরি ঢাকার রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। 

বালিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রেলমন্ত্রীর স্ত্রী মিসেস সাঈদা হাকিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ। 

বালিয়াকান্দি উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সামসুল আলম সুফির সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফকরুজ্জামান মুকুট, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মো. মোস্তফা মুন্সি, পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওদুদ মন্ডল, গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মন্ডল, জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বালিয়াকান্দি উপজেলা আলীগের সহ-সভাপতি একেএম ফরিদ হোসেন মিয়া বাবু, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বুড়ো, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রমজান আলী খানসহ জেলা আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরএআর