করোনাভাইরাসে মৃত ব্যক্তির জানাজা ও দাফনে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) মাটিয়ামালিপাড়া গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে।

পরে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় জানাজা-দাফন হলেও এতে গ্রামের মানুষকে লকডাউনের ভয় দেখিয়ে অংশ নিতে দেননি মোফাজ্জল হোসেন।

জানা গেছে, ইউনিয়নের মাটিয়ামালিপাড়ার মুকুল আহম্মেদ (৫০) মার্চ মাসের শেষের দিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। পরে তার শারীরিক অবস্থান অবনতি হলে ৫ এপ্রিল তাকে রাজধানীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্টোলিভার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরদিন তাকে ওই হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। ৬ দিন আইসিইউতে চিকিৎসা শেষে অবস্থার উন্নতি হলে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নয় দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এ সময় তার করোনা নেগেটিভ আসে।

তবে করোনা পরবর্তী জটিলতায় আবারও শারীরীক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গত ২৩ এপ্রিল বিকেলে তিনি মারা যান।

মারা যাওয়ার পরে প্রথমে মরদেহ তার কর্মস্থল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার প্রথম নামাজে জানাজা হয়। পরে পরিবারের সিদ্ধান্ত ও মরহুমের ইচ্ছানুযায়ী মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি নিয়ে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় নেতা মোফাজ্জল হোসেন মরদেহ গ্রামে কবর দেওয়া ও দাফনে বাধা হয়ে দাঁড়ান। গ্রামবাসীকে উসকে দিয়ে তিনি মসজিদে তালা দিয়ে রাখেন, যেন খাটিয়াসহ অন্যান্য জিনিস ব্যবহার করতে না পারেন তারা।

এমনকি মরদেহ গ্রামে নিতে দেওয়া হবে না বলেও ঘোষণা দেন তিনি। এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা অসহায় হয়ে পড়েন। পরে নিরুপায় হয়ে এ বিষয়ে তারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দাফনের অনুমতি দিলেও মোফাজ্জল গ্রামের মানুষকে অংশ নিতে নিষেধ করে দেন। কেউ জানাজায় অংশ নিলে তাকে ও তার পরিবারকে লকডাউন দিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।

মুকুল আহম্মেদের পরিবারের সদস্যরা ঢাকা পোস্টকে জানান, প্রশাসনের সহযোগিতায় মরদেহ দাফন করতে পারলেও আমাদের গ্রামে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কাউকেও জানাজায়ও অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোফাজ্জল হোসেন বলেন, এ অভিযোগ মিথ্যা। আমি কোনো জানাজা বা দাফনে বাধা দেইনি।

শুভ কুমার ঘোষ/এমএসআর