মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় কৃষক ফজলুর রহমানকে কৃষি অফিস থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। বুধবার (৩ এপ্রিল) দিনের মধ্যে প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া ভুক্তভোগী ওই কৃষকের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মুঠোফোনে মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রবিআহ নূর আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) শিবালয় উপজেলা কৃষি অফিসে এক গুচ্ছ ধান নিয়ে পরামর্শ নিতে যান কৃষক ফজলুর রহমান। কৃষি অফিসে দায়িত্বরত কৃষি কর্মকর্তা ওই কৃষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা এবং কৃষককে অফিস থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় ঢাকা পোস্টসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। পরে তাদের নির্দেশে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) মো. শহিদুল আমিন এবং অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) মো. মামুন ইয়াকুবকে নিয়ে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তারা আজ সকাল থেকে ঘটনাস্থল গিয়ে কাজ করেছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রবিআহ নূর আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিবালয় উপজেলা কৃষি অফিসের ঘটনায় আজকে জেলার দুইজন অফিসার এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদার ভুক্তভোগী ওই কৃষকের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় তার ক্ষতিগ্রস্ত ধানের খেতও পরিদর্শন করেন।

তিনি আরও বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বোরো খেতে পোকার আক্রমণ হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নের গহেরপুর গ্রামের কৃষক ফজুলুর রহমান পরামর্শের জন্য একগুচ্ছ ধান হাতে কৃষি অফিসে যান। এ সময় তিনি ধানগুলো ছবি তুলার কথা বলেন এবং জেলার উপ-পরিচালকের ফোন নম্বর চান। একই সঙ্গে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে যান না বলে অভিযোগ করলে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন সুজন। পরে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন সুজন ওই কৃষককে বলেন, ‘আমি কি আপনার কামলা দিই? আপনি কি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন? আপনি বললেই মাঠে যেতে হবে? যা পারেন করেন গা। আপনি বেরিয়ে যান। যদি বয়স্ক লোক না হতেন তাহলে আপনাকে দেখে দিতাম।’ একপর্যায়ে তাকে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। ঘটনা জানার পর দুই সাংবাদিক ভুক্তভোগী কৃষককে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদারের কাছে গেলে তিনিও সাংবাদিকদের সামনেই কৃষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদার।

সোহেল হোসেন/এমজেইউ