তোফাজ্জল হোসেন

মাদারীপুরের কালকিনিতে পরকীয়ার জেরে ছেলেকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। পরে বিষ খাওয়া অবস্থায় বাবাকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে সদর হাসপাতালে। রোববার (২৫ এপ্রিল) রাতে কালকিনি উপজেলার গোপালপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতের নাম রনি (১০)। সে কালকিনির গোপালপুরের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে এবং খৈয়ারভাঙ্গা এতিমখানায় থেকে লেখাপড়া করতো।

স্বজনরা জানায়, সম্প্রতি তোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী মিনারার একই এলাকার চা বিক্রেতা আব্দুর রশিদের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দেড় মাস আগে মিনারা রশিদের সঙ্গে পালিয়ে যায়। এতে তোফাজ্জলের মনের ভেতর শুরু হয় মানসিক যন্ত্রণা। লোকলজ্জার ভয়ে ছেলে ও নিজেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন তোফাজ্জল।

সেই অনুযায়ী রোববার রাত ১০টার দিকে তোফাজ্জল ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছেলে রনিকে গলা কেটে হত্যা করে বলে জানান পরিবারের লোকজন। পরে নিজে বিষ পান করেন। খবর পেয়ে পুলিশ রনির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদেন্তর জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পাশাপাশি তোফাজ্জলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ের জামাই রুবেল জানান, রাত ১১টার দিকে সে শ্বশুরকে ডাকাডাকি করে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ধাক্কা দেয়। এ সময় ঘরের ভেতর রনির গলা কাটা মরদেহ ও তোফাজ্জলকে অচেতন হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার লাবু তালুকদারকে খরব দিলে তিনি কালকিনি থানায় জানান।

তোফাজ্জলের শ্যালক আনোয়ার হোসেন বলেন, মিনারা পরকীয়ার কারণে চা বিক্রেতা রশিদের সঙ্গে ঢাকা চলে যায়। তোফাজ্জল কষ্ট থেকে বাঁচতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, তোফাজ্জলকে গুরুতর অবস্থায় এখানে নিয়ে আসা হয়। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রথমে তার অবস্থা খারাপ থাকলেও এখন কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

কালকিনি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইশতিয়াক আসফাক রাসেল বলেন, তোফাজ্জল সুস্থ হলে তার কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্ত্রী অন্যত্র চলে যাওয়ার কারণে মানসিক যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে ছেলেকে হত্যা করে তোফাজ্জল। পরে নিজে বিষপান করে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল।

নাজমুল মোড়ল/এসপি