দেবাশীষ কুমার সরকার সঞ্জয়

যশোরের অভয়নগরে ডাকাতদের হামলায় দেবাশীষ কুমার সরকার সঞ্জয় (৪৫) নামে এক কাঠ ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় তার মা, স্ত্রী ও মেয়ে আহত হয়েছেন। সোমবার (২৬ এপ্রিল) ভোরে উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের চলিশিয়া গ্রামের পালপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

দেবাশীষ কুমার সরকার সঞ্জয় (৪৫) চলিশিয়া গ্রামের মৃত গৌরচন্দ্র সরকারের ছেলে। আহতরা হলেন- সঞ্জয়ের মা মিনতি সরকার (৬৫), স্ত্রী নিপা সরকার (৩৫) এবং একমাত্র মেয়ে দেবিকা সরকার (১৭)।

দেবাশীষের মা মিনতি সরকার বলেন, সোমবার ভোরে ৭/৮ জন মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাত রান্না ঘরের জানালার গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে। তারা সঞ্জয়ের ঘরে গিয়ে আলমারির চাবি দিতে বলে। চাবি না দেওয়ায় তারা সঞ্জয়কে মারপিট শুরু করে। এ সময় সঞ্জয়ের চিৎকারে আমরা ওই ঘরে ছুটে যাই।

সঞ্জয়কে বাঁচাতে তার স্ত্রী নিপা এগিয়ে গেলে ডাকাতরা রড ও ছোরা দিয়ে তাকেও গুরুতর জখম করে। এই দৃশ্য দেখে চিৎকার করলে তারা আমাকে ও নাতি দেবিকাকে পিটিয়ে জখম করে। পরে ডাকাতরা আলমারি ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার এবং আমার কাছে থাকা ৩০ হাজার টাকা, গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, হাতের চুড়ি ও কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। পরে প্রতিবেশীরা আমাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. চন্দন সরকার বলেন, হাসপাতালে আসার আগে দেবাশীষের মৃত্যু হয়েছে। আহত দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং গুরুতর আহত নিপা সরকারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। তার শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে  আঘাত করার চিহ্ন রয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া যশোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই রেজোয়ান জানান, নিহতের ঘরে থাকা আলমারি ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। রান্না ঘরের জানালার গ্রিল কাটা ছিল। ঘরের মধ্যে রক্তের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হত্যা রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।

অভয়নগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে দুর্বৃত্তরা গ্রিল কেটে চুরির উদ্দেশে ঘরে প্রবেশ করেছিল। বাড়ির লোকজন ঘুম থেকে জেগে বাধা দেওয়ায় বা অপরাধীদের চিনে ফেলায় তারা মারপিট করেছে। এতে ব্যবসায়ী সঞ্জয় নিহত হয়েছেন। তার স্ত্রীকে গুরুতর অবস্থায় খুলনায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে এবং জড়িতদের চিহ্নিত ও আটকের তৎপরতা শুরু করেছে।

জাহিদ হাসান/এসপি