বাস চালুর দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহীর পরিবহন শ্রমিকরা

রাজশাহীতে যাত্রীবাহী বাস চালানোর দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। রোববার (২ মে) সকালে নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন শ্রমিকরা। বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন তারা রাস্তায় নামেন।

করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দফায় দফায় বাড়ছে লকডাউন। লকডাউনের কারণে বন্ধ রয়েছে সড়কে যাত্রীবাহী বাস চলাচল। সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিধি-নিষেধ আরোপ করে খুলে দেওয়া হয়েছে শপিংমল। পরিবহন শ্রমিকদের ভাষ্য, তারাও বিধিনিষেধ মেনে রাস্তায় নামতে চান।

বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন পরিবহন শ্রমিক শাহলাল। লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তিনি। এতে তার সংসার চালানো দায়। তিনি জানান, টানা লকডাউনে বাস বন্ধ থাকায় তার মতো পরিবহন শ্রমিকদের মরার উপক্রম হয়েছে। বাড়িতে বাবা-মা, বউ-বাচ্চা নিয়ে কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি চলতে পারে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাস চালু হোক, না হলে বিকল্প ব্যবস্থা করা হোক।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বাসচালক সুমন আহমেদ বলেন, লকডাউনে বাস বন্ধ থাকায় রাজশাহীর প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এরা প্রত্যেকেই পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছে। আয় রোজগার না থাকায় এলাকার মুদি দোকানিরাও বাজার বাকিতে দিচ্ছেন না। এই অবস্থা চলতে থাকলে করোনায় নয়, না খেয়ে মরতে হবে।

রাজশাহী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা এই বিক্ষোভে অংশ নেন। নগরী ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে পরিবহন শ্রমিকরা এসে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।

তিনি বলেন, দেশে বাজার-ঘাট, ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খোলা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরাও গণপরিবহন চালাতে চাই। সরকার যদি আমাদের দাবি না মানেন তবে আমরা কেন্দ্রীয় ফেডারেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী চলব। তখন কেন্দ্র যা সিদ্ধান্ত নিবে তাই হবে।

তিনি আরও বলেন, মালিকরা আমাদের শ্রমিকদের কোনো নিয়োগপত্র দেন না। নিয়োগপত্র না থাকায় শ্রমিকদের জন্য দুর্যোগকালীন সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে না। দ্রুত পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দিতে হবে। এ ছাড়া শ্রমিক ইউনিয়নের যে কার্ড আছে, সেই কার্ড দেখে সরকারি বরাদ্দের ওএমএস এর চাল শ্রমিকদের দিতে হবে। এসব দাবি নিয়ে আগামী ৪ মে শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে।

এই শ্রমিক নেতা আরও বলেন, ওষুধ কিনতে না পেরে গত দুই সপ্তাহে চারজন শ্রমিক মারা গেছেন। এমন আরও শত শত বৃদ্ধ রোগাক্রান্ত শ্রমিক আছেন, যারা কোনো রকম এখনো বেঁচে আছেন। ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দুদিন একদিন পরপরই চাল, ডাল, মাছ, সবজি দেওয়া হচ্ছে কিছু শ্রমিক পরিবারকে। কিন্তু এভাবে খুব বেশি দিন সম্ভব নয়।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসপি