ভোলার চরফ্যাশনে দুই ভাইকে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনার এক মাসের মধ্যেই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া ভাড়াটে খুনি শরিফুল ইসলামকে (২৮) গ্রেফতারের পর পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করে। 

গ্রেফতার শরিফুল চরফ্যাশন উপজেলার চরমানিকা এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে বসবাস করে আসছিলেন। তিনি পেশায় প্রাইভেটকার চালক। 

মঙ্গলবার (০৪ মে) দুপুরে ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সার সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে সোমবার (০৩ মে) চট্টগ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ নিয়ে এই হত্যা মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করা হলো।

তিনি জানান, গ্রেফতার শরিফুল ইসলাম ভাড়াটে খুনি। দুই সহোদরকে খুন করতে তাকে আড়াই লাখ টাকায় ভাড়া করে চট্টগ্রাম থেকে চরফ্যাশনে আনা হয়েছিলো। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বেলালসহ চারজন হত্যার সঙ্গে জড়িত। ডাবল মার্ডারের ঘটনার এক মাসের মধ্যে পুলিশ হত্যার রহস্য উদযাটন করেছে। জমি বিক্রির টাকা চাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যকর এ ডাবল মার্ডারের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে গত ২১ মে প্রধান আসামি বেলাল, আবু মাঝি ও কাসেমকে গ্রেফতার করা হয়।

খুন হওয়া দুলাল (৫০) ও তপন (৫৫) চরফ্যাশন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত উপেন্দ্র চন্দ্র  সরকারের ছেলে। তিন বছর আগে থেকে তারা ভারতে বসবাস করে আসছিলেন। তিন বছর আগে এই দুই সহোদর চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ইউনিয়নের বেলাল গংদের কাছে ৪৬ শতাংশ জমি ২০ লাখ টাকা মূল্যে বিক্রি করেন। কিন্তু তখন তিন লাখ পরিশোধ করলেও বাকি ১৭ লাখ টাকা জমি রেজিস্ট্রি করার পর দেবেন বলে জানান। গত বছর  আসামিরা কৌশলে জমি রেজিস্ট্রি করলেও বাকি টাকা দেননি। এক বছর ধরে নানা টালবাহনা করতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই টাকা দেওয়ার কথা বলে তাদের ডেকে নিয়ে হত্যা করেন। 

এর আগে আসামিদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সার খুনের বিষয়ে জানান, জমি বিক্রির টাকা দেওয়ার কথা বলে দুই ভাই দুলাল ও তপনকে ডেকে নেন আসামিরা। গত ৭ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে শ্বাসরোধ করে দুলাল ও তপনকে হত্যা করা হয়। তাদের যাতে কেউ চিনতে না পারে সেজন্য গভীর রাতে পেট্রল ঢেলে মরদেহ দুটি পুড়িয়ে ফেলা হয়। এরপর রাতেই শরীর থেকে তাদের মাথা আলাদা করে খালে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা। ৮ এপ্রিল পুলিশ যখন ঘটনাস্থলের পাশে নিহতদের মাথার খোঁজ করছিল তখন রাতের আঁধারে হত্যাকারীরা খাল থেকে মাথা উঠিয়ে জনৈক মহিবুল্লাহর বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর