বৃদ্ধ সুজা মিয়ার হাতে রিকশার দাবি তুলে দেওয়া হচ্ছে

ছেলে নেই। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এখন স্ত্রী নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটছে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ সুজা মিয়ার। খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুরের কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহজাহান তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। বুধবার (৫ মে) দুপুরে সুজা মিয়ার হাতে ৭৫ হাজার টাকার একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা তুলে দেন। রিকশা পেয়ে সুজা মিয়ার মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে।

শিক্ষক মোহাম্মদ শাহজাহান স্থানীয় আদর্শ মানব কল্যাণ সংগঠনের মাধ্যমে রিকশাটি বৃদ্ধ সুজা মিয়াকে উপহার দেন। তিনি সংগঠনটির উপদেষ্টা। রিকশা হস্তান্তরের সময় সংগঠনটির সভাপতি প্রকৌশলী আবুল কাশেম সাদ্দাম, সহ-সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন শরীফ নিরব উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, সুজা মিয়া দিঘলী ইউনিয়নের উত্তর জামিরতলি গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে তার সংসার। বিয়ের পর দুই মেয়ে এখন স্বামীর ঘরে আছেন। মেয়েদের স্বামীদেরও অবস্থা তেমন ভালো না। এমন পরিস্থিতিতে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মদক্ষতা হারিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটছে তার। স্ত্রীকে নিয়ে কোনমতে দুবেলা দু-মুঠো খেয়ে বেঁচে আছেন। একদিন কাজ করতে পারলে অন্যদিন পারছেন না। 

বিষয়টি জানতে পেরে আদর্শ মানব কল্যাণ সংগঠন বাংলাদেশের সদস্যরা সুজা মিয়াকে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা উপহার দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। পরে সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহজাহান নিজের অর্থায়নে রিকশাটি কিনে সুজা মিয়াকে উপহার দেয়। উপজেলার বটতলী এলাকায় শো-রুমের সামনেই তার হাতে তুলে দেওয়া হয় রিকশাটি।

বৃদ্ধ সুজা মিয়া বলেন, সংসারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই। মেয়েদের স্বামীদেরও আমাকে সহযোগিতার মতো সামর্থ্য নেই। খুব কষ্টে দিন কাটে। রিকশাটি পেয়ে উপকার হয়েছে। আমি প্রতিদিন নামাজ পড়ে শিক্ষক ও সংগঠনটির সদস্যদের জন্য দোয়া করব।

এ ব্যাপারে সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী আবুল কাশেম সাদ্দাম বলেন, নিজেদের ব্যক্তিগত অর্থায়নে সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আসছি। বৃদ্ধ সুজা মিয়াকে একটি রিকশা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। অধ্যাপক শাহজাহানের আর্থিক সহযোগিতায় রিকশাটি কিনে সঙ্গে সঙ্গে তার হাতে তুলে দিয়েছি। এ কাজটিতে আমরা সফল হয়েছি। একই সঙ্গে সুজা মিয়াকে ব্যাংকে একটি হিসাব খুলে দিয়েছি, যেন তিনি ব্যাংকে টাকা জমাতে পারেন।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এসপি