নওগাঁয় সহকারী সার্জনকে শোকজ
ভারতফেরত আবু হেনাকে (৪২) নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়মবর্হিভূত ছাড়পত্র (রিলিজ) দেওয়ায় হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. গোলাম রাব্বানীকে শোকজ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ মে) জরুরি সভায় তাকে শোকজ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (০৬ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ সাঈদুল হক। আবু হেনা নওগাঁ শহরের প্রাণকেন্দ্র চকদেব মহল্লার হুমায়ন কবিরের ছেলে। রোববার (২ মে) তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৩ এপ্রিল ভারতে চিকিৎসার জন্য যান আবু হেনা। সেখানে ওপেনহার্ট সার্জারি করে ২৭ এপ্রিল বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালের আইসোলেশনে ছিলেন। ৩০ এপ্রিল সকাল ৭টা ২০ মিনিটে নওগাঁ সদর হাসপাতালে করোনার নমুনা দেন তিনি। সেখানে অ্যান্টিজেন ও পিসিআর দুই পদ্ধতিতে করোনা টেস্টের জন্য নমুনা দেন। অ্যান্টিজন পদ্ধতিতে তাৎক্ষণিক রিপোর্টে তার করোনা নেগেটিভ আসে। আর পিসিআর টেস্টের জন্য রিপোর্ট রাজশাহীতে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চকদেব মহল্লার কাশেম সরদার ও আমজাদ হোসেনসহ অন্যরা ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্থানীয়সহ তারা জানতেন না হেনার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
বিজ্ঞাপন
আবু হেনা মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে রিপোর্টে নেগেটিভ আসা আর শারীরিক অসুস্থতা না থাকায় জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, সদর উপজেলা নির্বাহীসহ অনেককে অনুরোধ করে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে রোববার বাসায় আসি। এরপর থেকে সরকারি নিয়ম মেনে বাসাতেই কোয়ারেন্টাইনে আছি। বর্তমানে আমার কোন শারীরিক সমস্য নেই। পরিবারের সবাই ভালো আছেন।
এ ব্যাপারে শোকজ হওয়া হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ সাঈদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে রিপোর্টে নেগেটিভ এলেও পিসিআর পদ্ধতিতে সোমবার (৩ মে) আবু হেনার করোনার পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এ ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে আবু হেনার খোঁজ নিতে গিয়ে দেখি তিনি হাসপাতালে নেই।
বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আগের দিন (রোববার) সন্ধ্যায় আবু হেনাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়েছেন হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. গোলাম রাব্বানী। ভারতে করোনার মহামারি জানার পরও সরকারি নিয়ম না মেনে নিয়মবর্হিভূত আমাকেসহ হাসপাতালের অন্যদের না জানিয়ে ছাড়পত্র দেওয়ায় মঙ্গলবার জরুরি সভায় তাকে শোকজ করা হয়।
নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার বিকেলে ঘটনাটি জানতে পেরে হাসপাতাল থেকে ঠিকানা নিয়ে আবু হেনার সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। তিনিসহ তার পরিবারের লোকজনকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
নওগাঁর সিভিল সার্জন (সিএস) এবিএম আবু হানিফ বলেন, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যদের না জানিয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় গেছেন আবু হেনা। হেনার করোনা পজিটিভ আসার ঘটনাটি জানতে পেরে আমরা তার বাড়ি যাই। তাকে হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার অনুরোধ জানালেও তাকে ফিরিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। বাসাতেই তিনি কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন বলে কথা দিয়েছেন।
শামীনূর রহমান/এসপি