বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা এক দফা দাবিতে লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এখনো সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করেছে আওয়ামী লীগ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোথায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।

রোববার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শহরের ঝুমুর ও মাদাম ব্রিজ এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পিছু হটে শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় এসে অবস্থান নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা মাদাম ব্রিজ থেকে ঝুমুর এলাকা পর্যন্ত অবস্থান নিয়েছেন।

এদিকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ৪ জনকে আহত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ৪ জনই ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। তারা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ হীরা, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ফয়সাল ও লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান প্রিয়।

এখন পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের অনেককেই আহত হয়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। তবে সংখ্যা বা তাদের নাম,পরিচয় জানা যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। এরপরে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের লোকজন বাগবাড়ি দখলে নেয়। এ সময় লক্ষ্মীপুর ন্যাশনালা আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ ভাঙচুর করে উত্তেজিত নেতাকর্মীরা। সাড়ে ১১ টার দিকে মাদাম ব্রিজ এলাকার দিকে গেলে আওয়ামী লীগকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা বাধা দেয়। এতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। গোলাগুলি ও ইটপাটকেল ছোঁড়াছুঁড়ির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ পিছু হটে চলে আসে। আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রলীগ নেতা শাহনেওয়াজ হীরা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে ঝুমুর অতিক্রম করছিলাম। এ সময় জামায়াত-শিবির ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। গুলিও করেছে। চাপাতি দিয়ে আমাদের অনেককে কুপিয়েছে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কয়েকজন জানায়, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ঝুমুর এলাকায় অবস্থান নিয়েছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ করেছে। আমাদের অনেকজন আহত হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালেও নেওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদারের মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

হাসান মাহমুদ শাকিল /এনটি