যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিট

যশোরে ভারতফেরত দুই বাংলাদেশির শরীরে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন। 

এ অবস্থায় ওই দুই রোগীকে আলাদা করে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি ভারত থেকে ফেরার পথে তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওই দুই রোগী বর্তমানে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

যবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ভারতফেরত করোনার রোগীর নমুনায় ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। ল্যাবে কিছু সিকোয়েন্স করে এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখন পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স করার প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি আমরা সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানিয়েছি। পাশাপাশি যশোর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি অবহিত করেছি।

যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক ও অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ইকবাল কবীর জাহিদ জানান, যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল থেকে ভারতফেরত ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছেন। আর এদের মধ্যে দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বি-১.৬১৭.২ এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তবে এটি ডাবল মিউটেশন নয়। যেহেতু একটি এসেছে তাই ডাবল মিউটেশন বা অন্য ভেরিয়েন্টও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

তিনি আরও জানান, যদিও শনাক্ত হওয়া ভ্যারিয়েন্টটি ডাবল মিউটেশন নয়। কিন্তু এটিই ভারতে ২০ ভাগ এবং যুক্তরাজ্যে ৫৯ ভাগ ছড়িয়েছে। 

প্রফেসর ড. ইকবাল কবীর জাহিদ জানান, কোন রোগীর নমুনায় এই ভ্যারিয়েন্ট এসেছে তা যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা এই রোগীদের আলাদাভাবে আইসোলেশনে রেখেছেন।

এ বিষয়ে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলিপ কুমার রায় বলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারের পিসিআর ল্যাব ও আইইডিসিআরে নমুনা পাঠানো হয়েছিল। আমরা এখনো কোনো তথ্য পায়নি। তথ্য পেলে আমাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের টিম প্রটোকল মেনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ রোধে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গত ২৬ এপ্রিল থেকে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা বিশেষ অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরছেন। গত ৪ মে পর্যন্ত বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে এক হাজার ৫৭৭ জন দেশে ফিরেছেন। যাদের বেনাপোলসহ যশোর জেলা ও পার্শ্ববর্তী চার জেলার হোটেলসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জন করোনা পজিটিভ যাত্রীর নমুনা সংগ্রহ করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনাম সেন্টারের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।

জাহিদ হাসান/আরএআর