বন্ধ চিনিকল চালুর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

১৩ জানুয়ারির মধ্যে শ্যামপুর চিনিকল চালু করা না হলে রংপুরে হরতালসহ বৃহত্তর কর্মসূচির হুমকি দিয়েছে শ্যামপুর চিনিকল রক্ষা কমিটি। রোববার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর নগরের গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন শ্যামপুর চিনিকল রক্ষা কমিটির সমন্বয়ক আব্দুল কুদ্দুস।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, লোকসানের অজুহাতে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন দেশের ছয়টি চিনিকল বন্ধ করে দিয়েছে। এর মধ্যে রংপুর বিভাগে রয়েছে চারটি। দেশে চিনির চাহিদা বছরে ১৬ থেকে ১৮ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু বাংলাদেশের ১৫টি চিনিকলে উৎপাদন হয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন চিনি। সরকার এই বিপুল সংখ্যকের কথা চিন্তা না করে দেশি-বিদেশি লুটেরাদের স্বার্থে চিনিকলগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আব্দুল কুদ্দুস বলেন, দীর্ঘদিনের পুরনো যন্ত্রপাতি, অদক্ষ প্রশাসন, উন্নতমানের বীজ, সার ও প্রণোদনা, প্রশিক্ষণের অভাব, রাজনৈতিক প্রভাবে অধিক জনবল নিয়োগ, দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা এবং এর সঙ্গে যুক্ত অসাধু শ্রমিক কর্মচারীদের যোগসাজশে বেপরোয়া দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনাই প্রধানত চিনি শিল্পে লোকসানের কারণ। অথচ সরকার এক সময়ে প্রতিটি চিনিকলে নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে বাড়তি বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন, ডিস্ট্রিলারি স্থাপন, জৈব সার উৎপাদন, মিনারেল ওয়াটর প্লান্ট, জুস প্লান্ট স্থাপনসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু তা আজও বাস্তবায়ন করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সরকার বলছে জাপান ও থাইল্যান্ড আমাদের দেশের চিনিকলগুলোতে ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চায়। তাহলে বিদেশিরা চিনিকল চালু, বিনিয়োগ ও লাভের সম্ভাবনা পেলেও সরকার তা দেখাতে পারছে না। এটা সরকারের দুর্বলতা এবং দেশি-বিদেশি লুটেরাদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টাযর বহিঃপ্রকাশ।

১৩ জানুয়ারি নগরীর কাচারী বাজারে মানববন্ধন, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে বলেও জানানো হয়। চার দফা দাবি আদায় না হলে ১৩ জানুয়ারির পর থেকে রংপুরে লাগাতার হরতালসহ বৃহত্তর কর্মসূচির হুমকি দেন শ্যামপুর চিনিকল রক্ষা কমিটির নেতারা। 

তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শ্যামপুর চিনিকল বন্ধ না করে আধুনিকায়ন, আখ চাষিদের কাছে লাভজনক দামে আখ ক্রয়, চিনিকলের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজদের শাস্তির আওতায় আনা ও শ্রমিক কর্মচারীদের ছাঁটাই বন্ধ করা এবং বেতন-ভাতা, পেনশন পরিশোধ করা।

সংবাদ সন্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- শ্যামপুর চিনিকল রক্ষা কমিটি সমন্বয়ক আব্দুল কুদ্দুস, শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লিয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান মাহামুদ, সাধারণ সম্পাদক বুলু আমিন,  সাবেক সভাপতি খতিবর রহমানসহ শ্যামপুর চিনিকল রক্ষা কমিটির সদস্যরা।

এসপি