সকাল ৭টার দিকে ফেরি ঘাটে এসেছেন ঢাকার জুরাইন চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে দুর্জয় হালদার। তার বাড়ি মাদারিপুর। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করার জন্য খুব ভোরে রওনা হয়ে ঘাটে পৌঁছেছেন তিনি। কিন্তু ঘাটে এসে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও পার হতে না পেরে হতাশ তিনি। তিনি বলেন, ভাই আমি ব্যাচেলর মানুষ। আমি একা কী করে ঢাকায় ঈদ করি? তাই বাড়ি যাচ্ছি বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করার জন্য।

জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘরমুখো মানুষের স্রোত রোধ করতে ঘাটের প্রবেশ মুখে গাড়ি দিয়ে ব্যারিকেড দিয়েছেন। যাত্রীরা সেই ব্যারিকেড উপেক্ষা করে এক কিলোমিটার পথ হেঁটে ঘাটে জমা হচ্ছেন। এ সময় তারা ঘাটে দাঁড়িয়ে নানা স্লোগান দিচ্ছেন। আমাদের দাবি মানতে হবে, ফেরি ছাড়তে হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ২ নং ঘাটের দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে যায়। এ সময় ৩ নং ঘাট থেকে ২ নং ঘাটের দিকে ছুটতে থাকে মানুষ। কার আগে কে যাবে তা নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। তবে শেষ পর্যন্ত এখনো কোন ফেরি ছেড়ে যায়নি। 

এদিকে ফেরি ঘাট দিয়ে পার হতে না পেরে ঘাটের পাশের কনকসার এলাকাসহ ঘাটের আশপাশের এলাকা দিয়ে ট্রলারে নদী পার হচ্ছে মানুষ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অবৈধভাবে পারাপারের কারণে ৬টি ট্রলার জব্দ করেছে নৌপুলিশ।

এ ব্যাপারে শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহম্মেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। কোন ফেরিই ছাড়া হচ্ছে না।

এর আগে শুক্রবার (০৭ মে) সকালে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণে শিমুলিয়া থেকে ফেরিতে কোনো যানবাহন উঠতে পারেনি। এদিন সকাল ৮টার দিকে রোরো ফেরি এনায়েতপুরী কোনো যানবাহন ছাড়াই ১২শ যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফেরিটি শুধুমাত্র যাত্রী নিয়েই শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে পোঁছায়। 

পরে করোনার বিস্তার রোধে সরকারি নির্দেশনায় শনিবার (০৮ মে) থেকে শিমু‌লিয়া-বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে দিনের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ রেখে রাতে শুধু পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। কিন্তু নির্দেশনা অমান্য করে ঘাটে ভিড় করতে থাকে ঘরমুখী মানুষ। পরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে যাত্রী পারাপার করায় মুন্সিগঞ্জের পদ্মা নদী থেকে ১৮টি ট্রলার জব্দ করে নৌ-পুলিশ।

ব.ম শামীম/এসপি