ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা তুলে দিয়েছেন শামীম ওসমান

‘গাড়ি চালু থাকলে আমাগো পেট চলে, গাড়ি বন্ধ থাকলে আমাগো খাইয়া না খাইয়া থাকতে হয়। আমাগো শুধু গালিই দেয় মানুষে, না খাইয়া থাকলেও কেউ জিগায় না। আমাগোও পরিবার আছে, বাচ্চাকাচ্চা আছে, বাপ-মা আছে। লকডাউনে আমাগো অবস্থা কেউ ভাবে নাই। যে শামীম ওসমানরে নিয়া পরিবহন সেক্টর জড়াইয়া খারাপ কথা কয়, সেই শামীম ওসমানই আমাগো পাশে খাড়াইল। যারা খারাপ কথা কয়, হেরাও বহুত পয়সার মালিক, হোয়াইট হাউসের মালিক, ভোটের সময় আইলে আমাগো হাত-পা ধরতেও ছাড়ে না কিন্তু আমাগো পাশে খাড়ায় নাই কোনো দিন।’

এভাবেই নিজেদের মনের ভাব আর ক্ষোভ ঝাড়লেন বেশ কয়েকজন পরিবহনশ্রমিক। কথা বলতে গিয়ে অনেকের চোখই ছিল অশ্রুতে টলমল।

লকডাউনে বন্ধ থাকা গণপরিবহনের দুর্দশাগ্রস্ত শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জের ৯০০ পরিবহনশ্রমিকের মাঝে তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা তুলে দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১১ মে) ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকার নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে এই সহায়তা প্রদান করেন তিনি।

শামীম ওসমান বলেন, লকডাউনে সবচেয়ে দুর্ভোগের মধ্যে আছেন পরিবহনশ্রমিকরা। কারণ, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা বেকার হয়ে পড়েছেন। এই বিশাল শ্রমিক জনগোষ্ঠীরও পরিবার রয়েছে। তারা বলতে গেলে দিন আনেন দিন খান। অথচ তাদের পাশে এখনো কাউকে দাঁড়াতে দেখলাম না।

সংসদ সদস্য বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এই দেশের ওপর, দেশের মানুষের ওপর আল্লাহর বিশেষ রহমত আছে। এ দেশের মানুষেরা এখনো না খেয়ে রোজা রাখলেও আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন। বৈজ্ঞানিক দিক বিবেচনা করলে সামনের পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে মানুষ যেভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামগঞ্জে গিয়েছেন আর ভারতীয় ভেরিয়েন্ট শনাক্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে আমি শঙ্কিত। তাই করোনার এই ভয়াবহতা থেকে একমাত্র আল্লাহই মুক্তি দিতে পারেন।

উপস্থিত পরিবহনশ্রমিকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে শামীম ওসমান বলেন, আমাদেরই উচিত ছিল আপনাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। আমি শহর, বন্দর, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি কারণ দলীয় লোকজন তাদের বাসা চিনে বলে। কিন্তু আপনাদের বাসা চিনি না বলেই এই কষ্ট দিয়েছি। আপনারা এসে আমাদের কৃতার্থ করেছেন। যদি আমার নেতাকর্মীরা আপনাদের বাড়ি চিনত, তবে আপনাদের এখানে আসতে হতো না।

পবিত্র কোরআনে বারবার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার তার সাধ্য অনুযায়ী করছে কিন্তু আমরা নিজেদের সচেতন করে তুলতে পারছি না। প্রতিটি এলাকার সামর্থ্যবানরা যদি তাদের সাধ্য অনুযায়ী অভাবগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ায়, তবে আমরা এই যুদ্ধে জয়ী হবই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম উদ্দিন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাতাত হোসেন সাজনু, পরিবহনশ্রমিক নেতা সামসুজ্জামান, জিলানী সর্দার প্রমুখ। 

রাজু আহমেদ/এনএ