চেয়ারম্যান আয়নাল হক

রংপুরের বদরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহারের ৪৫০ টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়নাল হককে লাঞ্ছিত করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। একই সঙ্গে উপজেলা চত্বরে বিক্ষোভ করেছেন তারা।

বুধবার (১২ মে) দুপুর পৌনে ১টার দিকে বদরগঞ্জ উপজেলা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে ইউপি চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে চেয়ারম্যান আয়নাল হক প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের টাকা সঠিকভাবে বণ্টনের নিশ্চয়তা দেন।

ঘটনাস্থলে থাকা একাধিক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের টাকা না পাওয়ায় বিক্ষোভ করেছেন বলে জানা গেছে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, ১০ নম্বর মধুপুর ইউনিয়নে ৬ হাজার ৯৬ জন অসহায় দুস্থ মানুষের জন্য ৪৫০ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই টাকা বিতরণ হচ্ছিল ইউনিয়ন পরিষদে। যাদের নাম আছে সবাই পাবেন। এরই মধ্যে কিছু লোকজন টাকা পাননি অভিযোগ তুলে উপজেলা চত্বরে আসেন। এমন সময় চেয়ারম্যান আয়নাল হক আসলে তাকে কে বা কারা পথরোধ করে লাঞ্ছিত করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে নেওয়া হয়। 

ঘটনা জানার পর উপজেলা চত্বরে আসেন বদরগঞ্জের সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। পরে তারা নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে বৈঠকে বসেন। সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হককে লাঞ্ছিত করার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা হয়। 

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ত্রাণ বিতরণ নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে। পরে সেটা সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও মিলে সমাধান করেছেন। 

বৈঠকে উপস্থিত থাকা রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইটকে একাধিকার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। 

অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে ফোনে কথা বলতে রাজি হননি মধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়নাল হক। 

সম্প্রতি চেক জালিয়াতি মামলায় চেয়ারম্যান আয়নাল হক গ্রেফতার হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের নির্বাচিত শত ভাগ বিধবা ভাতা ভোগীদের কাছ হতে জনপ্রতি চার হাজার টাকা করে উৎকোচ গ্রহণ করে ভাতা না করে দেওয়া, প্রকৃত প্রতিবন্ধীদের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত না করায় ভুক্তোভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এর আগে ২০১৯ সালে আয়নাল হকের বিরুদ্ধে ভিজিডি কার্ড ও এলজি এসপির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএম