শেষ মুহূর্তে বেড়েছে নতুন নোটের বিকিকিনি
রাত পোহালেই খুশির ঈদ। চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। যে যার পছন্দের কাপড়, প্রসাধনী আর খাদ্যসামগ্রী কিনতে ব্যস্ত। ঈদের আগের দিন নগরে-বন্দরে, হাটে-বাজারে সবখানেই মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এই ভিড়ে বাদ পড়েনি টাকা বিকিকিনির দোকানগুলোও। ঈদ এলেই কদর বাড়ে নতুন নোটের ব্যবসায়ীদের। তবে রংপুরে বরাদ্দ কম থাকায় এবার নতুন নোটের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) দুপুরে রংপুর নগরের জেলা পরিষদ কমিউনিটি সুপার মার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নতুন নোটের বিক্রি বেড়েছে। বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড় টাকা কেনাবেচার দোকানগুলোতে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেকে ঈদের সালামি দিতে নতুন নোট কিনছেন। আবার কেউ কেউ কিনছেন ফিতরা ও জাকাত হিসেবে চকচকে নতুন নোট দেওয়ার জন্য। বান্ডিল (১০০টি নোট) প্রতি নোটভেদে ৪০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। চাহিদা বাড়ায় টাকা বিকিকিনির দোকানিরা নতুন নোটের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। ক্রেতাদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। কড়কড়ে নতুন নোট ছোট-বড় সবার ঈদ আনন্দের অংশ।
বিজ্ঞাপন
চকচকে নোট কিনতে আসা মেজবাহুল হিমেল নামে এক যুবক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে নতুন জামা, পাঞ্জাবি আর জুতার পাশাপাশি সালামি হিসেবে নতুন টাকা পেলে শিশুরা সবচেয়ে বেশি খুশি হয়। শুধু ছোটরা নয়, বড়দেরও নতুন নোট পছন্দ। ঈদের দিনে নতুন নোট বিনিময় আনন্দ দেয়। এ কারণে নতুন নোটের ১০ ও ২০ টাকার বান্ডিল কিনতে এসেছি।
ব্যাংকের লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও অনেক সময়ে নতুন টাকা পেতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তিনি চাকরি করেন। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, অফিস সময়ের পরে ঝামেলামুক্তভাবে নতুন টাকা কিনতেই এখানে আসা। এর আগে দুদিন ব্যাংকে গিয়ে ফিরে এসেছি। ঈদে নতুন নোট সরবরাহ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছরই ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু রংপুরের ব্যাংকগুলো থেকে বলা হয়েছে- বরাদ্দ কম থাকায় সবাইকে নতুন নোট দেয়া সম্ভব হয়নি।
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদে ৫, ১০, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোটের চাহিদা বেশি। এ ছাড়াও এক ও দুই টাকার কয়েন এবং ১০০, ২০০, ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোটের চাহিদাও বেশ। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ১০ ও ২০ টাকার নতুন নোটের। এখানে ১০ টাকার ১০০টি নোটের একটি বান্ডিল বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকা। ২০ টাকার ১০০ নোটের বান্ডিল মিলছে ২ হাজার ৮০ টাকায়। ৫০ টাকার ১০০টি নোটের বান্ডিল ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেশি দিতে হচ্ছে।
৩২ বছর ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রঞ্জু মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, এবার সবচেয়ে বেশি চাহিদা ১০ ও ২০ টাকার নোটের। বেশির ভাগ ক্রেতা ঈদের সালামি ও জাকাত-ফিতরা দেওয়ার জন্য নতুন নোট কিনছেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর শাখা থেকে এবার নতুন নোট তাদের মতো ব্যবসায়ীদের জন্য বরাদ্দ দেয়নি। ব্যবসা ধরে রাখতে তারা বগুড়া থেকে নতুন নোট এনে বিক্রি করছেন।
আরেক টাকা বিক্রেতা খলিলুর রহমান খলিল বলেন, নয়া টাকার চাহিদা বেশি। কিন্তু হামার রংপুরোত এবার টাকা নাই। বাংলাদেশ ব্যাংকোত তিনদিন য্যায়া ফিরি আসছি। কায়ো টাকা দিবার পারে নাই। ব্যাংকগুল্যা তো মহাজনোক ছাড়া নয়া টাকা হামাক দেয় না। ওই তকনে বগুড়া থাকি নয়া টাকা আনছি।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর