সাভারের আশুলিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক পরিবহন শ্রমিকের হাতের ভেতরে কাঁচের টুকরো রেখেই সেলাই দিয়ে তিনদিন ড্রেসিং করেছে একটি প্রাইভেট ক্লিনিক। মঙ্গলবার (১৮ মে) রাতে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকার অভিযুক্ত ডা. মোস্তফা মেডিকেল সেন্টারে বৈঠক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে গত ৫ মে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাড়ইপাড়া এলাকায় ইজিবাইক দুর্ঘটনায় হাতের ভেতরে কাঁচের টুকরো ঢুকলে ডা. মোস্তফা মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিতে যান শাকিল (২৭) নামে ওই পরিবহন শ্রমিক। 

ভুক্তভোগী শাকিল আহমেদ গাজীপুরের বাড়ইপাড়ার বড়কুটি এলাকার  আব্দুস সামাদ ব্যাপারীর ছেলে। তিনি সাভার পরিবহনে কাজ করেন।

শাকিল আহমেদ জানান, গত ৫ মে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক দুর্ঘটনায় তার হাতের ভেতর কাঁচের টুকরো ঢুকে যায়। পরে ডা. মোস্তফা মেডিকেল সেন্টারে গেলে তারা হাতের ভেতর কাঁচের টুকরো রেখে ড্রেসিং করে ছয়টি সেলাই দেন। এরপর তিনদিন তারা হাত ড্রেসিং করে দেন। 

তিনি অভিযোগ করেন, সেলাই কাটার পর তার হাতে বাতাশ লাগলে ঝিম ঝিম করে এবং ফুলে যায়। আঙুল নাড়াচাড়া করলে কাঁচের টুকরো তার হাতের মধ্যে বাজে। ঈদের দিন সব বন্ধ থাকায় নিজেই তিনি হাতের ব্যান্ডেজ খুলে ফেলেন। যন্ত্রণা বেশি হলে গাজীপুরের সখীপুর এলাকার মডার্ন হাসপাতালে গিয়ে এক্সরে করে দেখেন তার হাতের ভেতর আরও কাঁচের টুকরো রয়েছে। পরে অপারেশন করে তিন টুকরো কাঁচ বের করা হয়। তার হাতের একটি রগও কেটে গেছে। ভালো একটি মেডিকেল যেমন ঢাকা মেডিকেল বা পঙ্গুতে সার্জারি করার পরামর্শ দেন সেখানকার ডাক্তার। মডার্ন হাসপাতালের রিপোর্ট নিয়ে আবার আজ ডা. মোস্তফা মেডিকেল সেন্টারে গেলে তারা বলেন, ভুল হতেই পারে। এক্সরে কেন করালেন না। যদিও ডাক্তার সেসময় এক্সরের কথা বলেননি। 

ভুক্তভোগী শাকিল বলেন, ডা. মোস্তফা মেডিকেল সেন্টারের উচিত ছিল এক্সরে করে ভালোভাবে দেখে ড্রেসিং করে সেলাই দেওয়া। দুর্ঘটনার দিন তারা যদি বিষয়টি ধরতে পারতো তাহলে এই বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হতো না। এখন ডা. মোস্তফা মেডিকেল সেন্টার কতৃপক্ষ বলছে- তাদের সার্জন আছে। তাকে দিয়ে হাতের পরবর্তী অপারেশন করা হবে। কিন্তু তাদের কথা আমি বিশ্বাস করি না। 

এ ব্যাপারে ডা. মোস্তফা মেডিকেল সেন্টারের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ জুয়েল বলেন, শাকিল আহমেদ হাসপাতালে আসছিলেন। তার হাতে সমস্যা হওয়ায় আমরা বলেছি এক্সরে করান। পরে মডার্ন হাসপাতালে গিয়ে হাতের গ্লাসটা বের করেছে। এখন তার হাতে নাকি রগের সমস্যা রয়ে গেছে। যদি আবার চিকিৎসা করতে হয় তাহলে আমরা আমাদের সার্জন দিয়ে চিকিৎসা করাতে চেয়েছি। না হলে তার পছন্দের হাসপাতাল চিকিৎসা করানো হবে।

মাহিদুল মাহিদ/আরএআর