তিন জেলায় প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা
ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাদারীপুর এই তিন জেলায় প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে একটি জুম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২২ মে) রাত ৮টায় শুরু হওয়া এই জুম মিটিং চলে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত।
কানাডার আলবার্টা ক্যালগেরির তেল-গ্যাস বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নেওয়াজ খালিছ আহমেদের উপস্থাপনায় জুম মিটিংয়ে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ।
জুম মিটিংয়ে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহফুজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বদরুল আলম, এনার্জি ও পাওয়ার-এর সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন, জসিম উদ্দিন, ড. নাসির, নাজিম আহমেদ, ড. সৈয়দ ইসমাইল হোসেনসহ কানাডা, আমেরিকা, লন্ডন, নরওয়ে, ঢাকা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাদারীপরের সাংবাদিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিজ্ঞাপন
আলোচনায় সভায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মাদারীপুর জেলার ভূগর্ভে বিপুল পরিমাণ হাড্রোকার্বনের স্তরীভূত ফাঁদ রয়েছে। চার থেকে ছয় কিলোমিটার গভীরে এসব ফাঁদে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে।
সভায় ড. বদরুল ইসলাম বলেন, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মাদারীপুরেও গ্যাস রয়েছে। কিন্তু গভীরতার কারণে এসব অঞ্চলে গ্যাসের অনুসন্ধানই করা হয়নি।
বিজ্ঞাপন
সাংবাদিক মোল্লা মো. আমজাদ হোসেন বলেন, মীর মঈনুল হক লেকচার সিরিজ-৬ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আলোচনা। বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের অনেক বিভ্রান্তি বাংলাদেশের মানুষের ক্ষতি করছে। তাদের মধ্যে দুটি আলোচনা চলে। এক পক্ষ বলছে, বাংলাদেশের গ্যাস ফুরিয়ে আসছে। অন্য পক্ষ বলছে, বাংলাদেশে গ্যাসের ব্যাপক মজুত রয়েছে। তবে একটি বিষয় সত্য, বাংলাদেশের মধ্যে সহজ পথে গ্যাস পাওয়ার অবস্থা শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাপেক্স একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাপেক্সকে শক্তিশালী করেছেন। তাদের অনেক দায়িত্ব। রাশিয়ার যে প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কাজ করছে, তাদের সঙ্গে বাপেক্সকে কাজ করার সুযোগ দিলে ভালো হতো বলে মনে করেন তিনি।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহফুজুর রহমান বলেন, সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার। খসড়া একটি তালিকা ও খনন সার্ভে করা দরকার।
বিশেষ অতিথি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, গ্যাস-তেল অনুসন্ধানের কাজটি ব্যাপকভাবে করা দরকার। তবে গ্যাস জলে ও স্থলে আলাদা করে অনুসন্ধান করলে ভালো হবে।
মূল প্রবন্ধ নিয়ে নেওয়াজ খালিছ আহমেদের গবেষণায় উঠে আসে এই তিন জেলার চার থেকে ছয় কিলোমিটার গভীরে রয়েছে স্তরীভূত ফাঁদ। এর মধ্যে ফরিদপুরকে ধরে নিয়ে কাজ করলে দেশের যে গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে, তা দূর হবে।
আলোচনায় গবেষকদের কথায় উঠে আসে, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মাদারীপুর জেলায় প্রচুর গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাপেক্স ৯টি গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান দিতে পেরেছে এ পর্যন্ত দেশে। এর মধ্যে সব কটিই ছিল অসমতল অংশে। এখন সমতল অংশে বাপেক্সের গবেষণা বাড়ানো উচিত হবে। এসব অংশে প্রচুর গ্যাস রয়েছে বলে আলোচকরা জোর দিয়ে জানান।
মীর সামসুজ্জামান/এনএ