প্রচণ্ড দাবদাহে নরসিংদীতে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে তালশাঁস

এক কোষ ১৫, দুই কোষ ২৫; দেইখ্যা লন, বাইছা লন এক পিস ৩০ টাকা। প্রচণ্ড দাবদাহে নরসিংদীতে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে তালশাঁস।

গত সপ্তাহে ১০-১২ টাকায় বিক্রি হয়েছিল তালশাঁসের পিস। সোমবার (২৪ মে) নরসিংদীর বিভিন্ন হাট ও মোড়ে ৩০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষকের কাছ থেকে তালশাঁসের পিস পাঁচ টাকা কেনা হয়। কিন্তু গাছ থেকে নেমে বিক্রেতার ভ্যানে উঠলেই দাম হয় ৩০ টাকা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, তালশাঁসকে স্থানীয়রা আষাঢ়ি বলা ডাকেন। ভেতরে সতেজ কোমল, নির্ভেজাল রসে ভরা উপাদেয় তালশাঁস অনেকের পছন্দের। 

স্থানীয় কয়েকটি বাজার ও মোড় ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শুরুতে তালশাঁসের পিস সর্বোচ্চ ১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গড়ে ১০ টাকা ছিল। কিন্তু এখন ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে ৩৫ টাকার বেশি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্তদের দাম জেনে খালি হাতে ফিরতে হয় ঘরে।

নরসিংদী রেলস্টেশন সংলগ্ন মোড়ের বাসিন্দা রাশেদা বেগম বলেন, গত বছর দুই পিস আষাঢ়ি ১৫ টাকায় কিনেছিলাম। এবার একটার দাম ৩০ টাকা। আমাদের নাগালের বাইরে। খাব না আষাঢ়ি।

স্থানীয় হোমিও চিকিৎসক অঞ্জন দাস বলেন, তালশাঁস লিভারের সমস্যা এ রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। হজমে সহায়তা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় ও শরীরের দুর্বলতা কাটায়। আজ দুইটা ​তালশাঁস কিনেছি ৬০ টাকায়। অথচ ১৫ দিন আগেও পিস ১০ টাকা ছিল।

নরসিংদী শিক্ষা চত্বর এলাকায় তালশাঁস বিক্রি করা মো. মুহিব বলেন, আগে ১০-১৫ টাকা ছিল। কিন্তু এখন কিনে আনতে হয় বেশি দামে। চাহিদাও বেশি। এক ভ্যান তালশাঁস আনলে দুপুরের আগেই শেষ হয়ে যায়। রোদের তাপ বেশি বলে মানুষ বেশি নেয়।

নরসিংদী সরকারি কলেজের পেছনে এক সপ্তাহ ধরে তালশাঁস বিক্রি করেন আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, আসলে চাহিদা বেশি। চাহিদা বেশি থাকায় দামও আমরা বেশি নিচ্ছি। অনায়াসে যে কেউ ৩০ টাকায় কিনে নিয়ে যায়।

দাম বাড়ার পেছনে কোনো সিন্ডিকেট কিংবা মধ্যস্বত্বভোগী আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মুখ খোলেননি কোনো বিক্রেতা।

ভেতরে সতেজ কোমল, নির্ভেজাল রসে ভরা উপাদেয় তালশাঁস অনেকের পছন্দের

রায়পুরা এলাকার তালগাছ মালিক মো. রাকিব রাজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক গাছের সব তালশাঁস ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি। ১৫০টির বেশি তালশাঁস ছিল। ভ্যান খরচ বাদ দিয়ে পাঁচ টাকার বেশি পড়েনি। দেখে অবাক হলাম পাঁচ টাকার তালশাঁস ৩০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা।

রাজু আফনান নামে পলাশের আরেক তালগাছ মালিক বলেন, আমাদের এলাকায় প্রচুর তালগাছ। প্রতি গাছ ৩০০-৫০০ টাকা বিক্রি হয়। প্রতি গাছে ২০০-২৫০ তালশাঁস থাকে। কিন্তু বাজারে তালশাঁসের পিস ৩০ টাকায় বিক্রি হয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের নরসিংদীর সহকারী পরিচালক মাহমুদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এভাবে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা ঠিক না। হকার কিংবা ভ্রাম্যমাণ দোকান যারা চালান; তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না।

রাকিবুল ইসলাম/এএম