৫০ টাকার জন্য মেরামত হচ্ছে না হাসপাতালের আইপিএস
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ৩০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে বিদ্যুৎ-সমস্যার সমাধান হয়নি দীর্ঘদিনেও। রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালজুড়ে নেমে আসে ঘন অন্ধকার। তখন মোমবাতি ও মোবাইলের আলোই একমাত্র ভরসা। এভাবে চলে চিকিৎসাসেবাও। এতে যেমন দুর্ভোগ সহ্য করেন রোগী ও তার স্বজনরা, তেমনি অবহেলার অভিযোগ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ফিরোজ হোসেন তালুকদারের বিরুদ্ধে।
একদিকে হাসপাতালের নেই নিজস্ব বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, অন্যদিকে মাত্র ৫০ টাকার একটা সকেটের অভাবে চালু করা হচ্ছে না অন্যের দেওয়া একটি আইপিএস। বিদ্যুৎ থাকলেও জ্বলে না হাসপাতাল ভবনের সামনের আলোসহ অসংখ্য আলোক বাতি।
ফলে রাত হলেই বোঝার উপায় নেই, এটি হাসপাতাল নাকি অন্য কিছু। আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তার উদাসীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতাকেই দায়ী করছেন সবাই।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, চার-পাঁচ মাস আগে হাসপাতাল ও রোগীদের সুবিধার্থে একটি আইপিএস দান করেন স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। কয়েক দিন চলার পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু প্রায় পাঁচ মাস হলেও সারানো হচ্ছে না আইপিএস।
হাসপাতাল-সংশ্লিষ্ট লোকজন জানান, মাত্র ৫০ টাকার একটি সকেটের অভাবে আইপিএস অকেজো হয়ে পড়ে আছে। আর কর্তৃপক্ষের এই অবহেলায় ভোগান্তি ও অসহ্য কষ্ট ভোগ করছে উপজেলার হাজার হাজার রোগী ও সেবাপ্রার্থী।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতালের স্টোরকিপার কিবরিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইপিএসের কিছু সমস্যা থাকলেও আমি নিজে এটি ঠিক করে এনেছি। এখন শুধু ৫০ টাকা দামের একটি সকেট লাগালেই হয়ে যায়। আমি বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বললেও আজ অবধি কোনো সমাধান হয়নি।
আইপিএস প্রদানকারী ব্যবসায়ী মো. শাহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোগীদের কষ্ট ও ভোগান্তির বিষয়টি ভেবে হাসপাতালে একটি আইপিএস দিয়েছিলাম কিন্তু আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তার অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতায় সেটি এখন আর চলে না। এ কারণে হাসপাতালটি অন্ধকারে থাকে, রোগীরা থাকে দুর্ভোগে।
পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডের একাধিক রোগী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দিনে বিদ্যুৎ গেলে গরমে কষ্ট হয় কিন্তু রাতে যখন বিদ্যুৎ যায়, তখন মোবাইলের ও মোমবাতির আলোই হয় শেষ ভরসা। একটা অজানা আতঙ্ক এ সময় কাজ করে বলে জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স বলেন, রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে রোগীরা মোমবাতি জ্বালায় আর আমরা মোবাইলের আলোতে চিকিৎসাসেবা দিই। এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
এ বিষয়ে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. ফিরোজ হোসেন তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইপিএস অনেক দিন হলো নষ্ট হয়ে থাকায় এই দুর্ভোগ। আইপিএস সারাতে অনেক টাকার দরকার ও অনেক ঝামেলা। তাই ঠিক করানো হচ্ছে না। তবে হাসপাতালের স্টাফ কিবরিয়ার জানালেন একটি সকেট হলেই বিদ্যুতের সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে, এমনটা বললে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এই কর্মকর্তা।
সিরাজগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন অফিসে দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. সৌমিত্র বসাক ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আগে জানতাম না। খোঁজ নিয়ে আইপিএস ঠিক করানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
শুভ কুমার ঘোষ/এনএ