পদ্মা সেতুতে সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান বসানো হয়েছে

স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান বসানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর এফ-২ নামে স্প্যানটি বসানো হয়। এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ অংশ (৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার) দৃশ্যমান হলো। 

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে বুধবার (৯ ডিসেম্বর) মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ভাসমান ক্রেন ‘তিয়ান ই’ এর মাধ্যমে ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১ তম স্প্যানটি নির্ধারিত পিলারের কাছে নেয়া হয়। ৪০তম স্প্যান বসানোর ছয় দিনের মাথায় ৪১তম স্প্যান বাসানো হলো। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ৯১ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৩৮ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।

মূল সেতুর কাজের চুক্তি মূল্য ১২ হাজার ১৩৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৭২৩ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৫০ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৫ দশমিক ১৭ ভাগ শেষ হয়েছে। নদীশাসন কাজের চুক্তি মূল্য আট হাজার ৭০৭ দশমিক ৮১ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা।

অনেক আগেই সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ শেষ হয়েছে। সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার খাত, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ খাত, পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা, ভ্যাট ও আয়কর, যানবাহন, বেতন ও ভাতাদি এবং অন্যান্য খাতে মোট বরাদ্দ সাত হাজার ৭১৬ দশমিক ৯১ কোটি টাকা।

প্রকল্পের সর্বমোট বাজেট ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার ১১৫ দশমিক দুই কোটি টাকা, অর্থাৎ ৭৯ দশমিক ৮৯ ভাগ। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৮২ দশমিক ৫০ ভাগ।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৪১টি স্প্যান। 

৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণে কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে পদ্মা সেতু।

আরএআর