বগুড়ায় মাদরাসায় গাঁজা সেবনে বাধা দেয়ায় জয়নাল আবেদিন নামে এক নৈশপ্রহরীকে গলাকেটে হত্যার করার কথা স্বীকার করেছেন কথিত সাংবাদিক তানভীরুল ইসলাম তানভীর (২১)। শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

এ ঘটনায় তানভীর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তানভীর শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদ উত্তরপাড়ার বাসিন্দা এনামুল হক মিঠু মিয়ার ছেলে। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক মাতৃভূমির খবর’র বগুড়া জেলা সংবাদদাতা বলে জানিয়েছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) গভীররাতে বগুড়ার শাজাহানপুরের সুজাবাদ উত্তরপাড়া দাখিল মাদরাসার নৈশপ্রহরী জয়নাল আবেদীনকে (৬৫) ডিউটিরত অবস্থায় কুপিয়ে হত্যা করে তানভীর। পরদিন শুক্রবার (২৮ মে) সকালে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত জয়নাল আবেদীন উপজেলার সুজাবাদ উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত মীর বক্তারের ছেলে। শনিবার নিহতের ছেলে আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

মামলার পর থেকে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞার নির্দেশে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে রহস্য উদঘাটনে কাজ করতে শুরু করে জেলা পুলিশের কয়েকটি ইউনিট। 

পুলিশ জানিয়েছে, খুনি তানভীর পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে পেশায় একজন সাংবাদিক এবং একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে পার্ট টাইম চাকরি করে। গত ১ মাস আগে প্রেম করে গাবতলী উপজেলার একটি মেয়েকে বিয়েও করেছে। কিন্তু সংসারে অভাব থাকায় পারিবারিক অশান্তি দেখা দেয়। ঘটনার দিন বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে তানভীর বেরিয়ে যায়। 

এরপর বাড়ির পাশে সুজাবাদ উত্তরপাড়া দাখিল মাদরাসার পকেট গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে একটি শ্রেণিকক্ষে গাঁজা সেবন করছিল। এসময় নৈশ প্রহরী জয়নাল আবেদীন তাকে বাধা দেন। এতে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে জয়নাল আবেদীন তানভীরকে একটি থাপ্পর দেয়। পরে রাতে (বৃহস্পতিবার) তানভীর ওই নৈশপ্রহরীর ঘরে ঢুকে ছুরি দিয়ে জয়নাল আবেদীনের কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর সে পাশের পুকুরে ছুরিটি ফেলে দিয়ে বাড়ি চলে যায়।

পরদিন শুক্রবার সকাল থেকে তানভীর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে এবং তদন্ত কর্মকর্তাদের কয়েকজন মাদকসেবীর নাম দেয়। এতে তদন্ত কর্মকর্তার সন্দেহ হলে কয়েকজন মাদকসেবীসহ তাকে থানায় নিয়ে আসে। এরপর জিঞ্জাসাবাদে তানভীর খুনের কথা স্বীকার করে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক সন্ধ্যায় জানান, আটকের পর তানভীরসহ ৪ জনকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এতে সে খুন করার বিষয়টি স্বীকার করেছে। আদালতে ১৬৪ ধারায় খুনের বিষয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে আসামিকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

সাখাওয়াত হোসেন জনি/এমএস