চাঁদপুরের বিভিন্ন এলাকায় গত ৫ মাসে পরকীয়া এবং প্রেমের টানে ৯৭ জন নারী ও কিশোরী ঘর ছেড়েছেন। এর মধ্যে শুধু মে মাসেই ২৮ জন কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। নিখোঁজদের বেশিরভাগই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত চাঁদপুর মডেল থানায় ৯৭ জন নারী ও কিশোরী নিখোঁজের ঘটনায় জিডি করা হয়েছে। 

থানা সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রী নিখোঁজ হওয়ায় অভিভাবকরা থানায় জিডি করেছেন। এর মধ্যে অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির কিশোরী বেশি। এছাড়াও পরকীয়া ও পারিবারিক কলহের জেরে অনেক নারী ঘর ছেড়েছেন। তাদের স্বামীরা থানায় নিখোঁজের জিডি করেছেন। তবে নিখোঁজদের অনেকেই পরিবারের কাছে ফিরে এসেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। মে মাস পর্যন্ত ৯৭ জন নারী ও কিশোরীর নিখোঁজের ব্যাপারে থানায় জিডি করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু মে মাসেই সর্বোচ্চ ২৮ জন কিশোরী নিখোঁজের বিষয়ে জিডি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, মোবাইল ফোনের কারণে মূলত এসব ঘটনা বেশি ঘটছে। মোবাইল ফোনে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোরীরা ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। এছাড়াও অনেক বিবাহিত নারী স্বামী বিদেশে থাকায় অন্যজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। তারাই হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে।  

ওসি আরও জানান, করোনাভাইরাসে কারণে অনেক অভিভাবক তাদের ছেলে-মেয়েদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়েছেন। তারা মনে করেন তাদের সন্তানরা অনলাইনে ক্লাস করেন, আসলে তা নয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের সন্তানরা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। এ জন্য অভিভাবকদেরকে আগে সচেতন হতে হবে। ছেলে-মেয়েরা কখন কী করে, কোথায় যায় সব খবর রাখতে হবে। 

মে মাসে সর্বাধিক কিশোরী নিখোঁজ হওয়া প্রসঙ্গে ওসি মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, লকডাউনে সবাই যার যার মত সময় কাটিয়েছে। এর মধ্যে গণপরিবহনও বন্ধ ছিল। হঠাৎ গণপরিবহন চালু হওয়ার পর থেকে জেলা থেকে অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। তাই মে মাসে সর্বোচ্চ কিশোরী নিখোঁজের খবর আমাদের কাছে এসেছে। আমরা প্রতিটি নিখোঁজের জিডি সুক্ষ্মভাবে তদন্ত করছি। এর মধ্যে অনেক নারী ও কিশোরীর খোঁজ পাওয়া গেলেও অভিভাবকরা আমাদের জানাননি। 

শরীফুল ইসলাম/আরএআর