স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বুঝিয়ে দেওয়া হয় বৃদ্ধার বাড়ি-জমি

স্বামীর মৃত্যু ও দুই ছেলেসন্তানের নিরুদ্দেশ হওয়ার পর পুরোপুরি অসহায় হয়ে পড়েন সাবিত্রী দত্ত। এরপর অংশীদাররা তাকে ভিটাছাড়া করার চেষ্টায় মত্ত হন। শুরু হয় অত্যাচার-নির্যাতন। এ কারণে স্বামীর ঘর ফেলে প্রতিবেশীদের কাছে আশ্রয় নেন তিনি। আর এই সুযোগে দখলে চলে যায় তার ঘরসহ স্বামীর ভিটা।

৬৫ বছর বয়সী বিধবা বৃদ্ধা সাবিত্রী দত্তের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুরে।

গত ৬ মে সাবিত্রী তার ভিটায় গেলে দখলদাররা তাকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়। ঘটনাটি বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বহরপুর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি রোমানা কবির বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আম্বিয়া সুলতানাকে জানান।

৮ মে ইউএনও সরেজমিনে বৃদ্ধার ভিটা পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পান। সেই সঙ্গে ওই বৃদ্ধা যাতে তার ভিটায় ফিরতে পারেন, দিয়ে যান প্রতিশ্রুতি। ২৯ মে তিনি বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বৃদ্ধার বাড়ি-জমি বুঝিয়ে দেন। এ সময় ইউএনও বৃদ্ধাকে একটি ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

বৃদ্ধা সাবিত্রী দত্ত ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলাম। স্বামীর ভিটাছাড়া ছিলাম। আমাকে অনেক নির্যাতন করেছে। আমি অসহায় বলে আমাকে সব সময় চাপে রাখত। অনেক দিন পর হলেও এখন আমি আমার সম্পত্তি বুঝে পেয়েছি। আমি অনেক খুশি। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর কাছে কৃতজ্ঞ।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বহরপুর শাখার সভাপতি রোমানা কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই বৃদ্ধ নারী তার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত ছিলেন। আজ তিনি তার অধিকার ফিরে পেলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আম্বিয়া সুলতানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃদ্ধার বিষয়টি জানার পরই আমি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করি। অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর অবশেষে আমরা ওই বৃদ্ধাকে তার ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি এখন বৃদ্ধা ভালো থাকবেন। তাকে একটি ঘর করে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।

উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বৃদ্ধ নারীর ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। প্রায় ১০ বছর তিনি তার স্বামীর ভিটাছাড়া ছিলেন। তার অভিযোগটি জানার পরই আমরা গুরুত্বসহকারে বিষয়টি শুনানি করি এবং তার যে ন্যায্য অধিকার, সেটা বুঝিয়ে দিই।

মীর সামসুজ্জামান/এনএ