ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের মাতৃত্বকাল ভাতা তহবিল থেকে ৬ মাসের ৪৮০০ টাকা উত্তোলন করেন গৃহবধূ নাছিমা। টাকা তুলে একটু দূরে যেতেই পথ রোধ করে দাঁড়ান তার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। পরে নাছিমার উত্তোলিত টাকা থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে বাকি ৪৩০০ টাকা নিয়ে নেন ইউপি সদস্য আবুল কাশেম গুড্ডু।

বুধবার (০২ জুন) জেলার ইসলামপুর উপজেলার চরপুটিমারি ইউনিয়নের ‘দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকাল’ ভাতা প্রকল্পের তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগীদের মাঝে ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরের ১০০ জন নারীর মাঝে ভাতা প্রদান করে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড। সেখানেই এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বুধবার বেনুয়ার চর গ্রামের গৃহবধূ মোছা. নাছিমা তার হিসাব থেকে ৬ মাসের ভাতার ৪৮০০ টাকা তোলেন। টাকা তোলার পর ইউপি সদস্য তাকে ৫০০ টাকা দিয়ে বাকি টাকা নিজের কাছে রাখেন। 

প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানান, চরপুটিমারি ইউনিয়নের কিছু ইউপি সদস্য গ্রামের দরিদ্র, অশিক্ষিত নারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে তাদের নামে ভাতা করে সেই সুবিধা নিজেরা ভোগ করেন। যার নামে ভাতা হয় অনেক সময় তিনি জানেনও না।

পরিচয় গোপন করে গৃহবধূ নাছিমার কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, টাকা তোলার আগের দিন ইউপি সদস্য কাশেম তার বাড়িতে যান। তার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রটি চান। জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে মেম্বার জানায়, কাল কার্ডটি নিয়ে বাজারে গেলে আমাকে ৫০০ টাকা দিবেন। পরের দিন তাকে ডেকে তার আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে ব্যাংক এশিয়া থেকে ৪৮০০ টাকা তোলেন। 

তারপর বাজারের এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে আমাকে ৫০০, ছেলেকে ৫০ ও রিকশা ভাড়া বাবদ ২০ টাকা দিয়ে বাকি টাকা মেম্বার নিয়ে যান। 

এদিকে ইউপি সদস্য কাশেম নাছিমার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি টাকা নিইনি। শুধু গুনে দিয়েছি।

এ ব্যাপারে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের এক কর্মকর্তা বলেন, অ্যাকাউন্টধারীর নাম, ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ নিশ্চিত করেই আমরা টাকা বিতরণ করেছি। টাকা পাওয়ার পর তিনি কি করছেন তা আমাদের জানার কথা নয়।

এ ব্যাপারে চরপুটিমারি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সামছুজ্জামান সুরুজ মাস্টার বলেন, মেম্বাররা এমন কাজ করছেন বলে আমার কানে খবর আসে। কিন্তু কারও কোনো অভিযোগ বা স্বীকারোক্তি পাওয়া না যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।

এসপি