পহেলা বৈশাখের উৎসবকে আনন্দমুখর করতে শিক্ষকদের গত কয়েকবছর ধরে বৈশাখী ভাতা দিচ্ছে সরকার। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষকরা মূল বেতনের ২০ শতাংশ নববর্ষের ভাতা পান। তবে এবার পহেলা বৈশাখের মাত্র এক দিনে আগে ছাড় দেওয়া হয়েছে এমপিওভুক্ত মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা।

জানা গেছে, পহেলা বৈশাখের আগের দিন মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) এমপিওভুক্ত মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের বৈশাখীর ভাতার জন্য ৫৭ কোটি টাকার চেক ছাড় করা হয়েছে। এ টাকা মঙ্গলবার ব্যাংকে ঢুকলেও কোনো শিক্ষক টাকা তুলতে পারবেন না।

এদিকে কারিগরি অধিদফতর বৈশাখী ভাতার চেক মঙ্গলবার দুপুরের পর ছাড় করেছে। আর সোমবার (১২ এপ্রিল) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতার চেক ছাড় করা হলেও বেশিরভাগ শিক্ষক মঙ্গলবার এ টাকা তুলতে পারেননি।

দেরি করে টাকা ছাড়ের কারণ ব্যাখ্যা করে মাদরাসা অধিদফতরের উপ-পরিচালক (অর্থ) মোহাম্মদ শামসুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জিও (সরকার আদেশ) সংক্রান্ত সমস্যার কারণে বৈশাখীর ভাতার চেক ছাড় করতে দেরি হয়েছে। এজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। বুধবার থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন থাকায় টাকা তোলার সময় বাড়িয়ে দিয়েছি। শিক্ষকরা আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত এ টাকা তুলতে পারবেন।

এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতার চেক ছাড় করা হয়েছে সোমবার (১২ এপ্রিল)। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, রূপালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংক থেকে তারা এ ভাতা তোলার কথা ছিল। যদিও মঙ্গলবার লকডাউনের আগে বেশিরভাগ শিক্ষক এ টাকা তুলতে পারেননি বলে জানা গেছে।

শিক্ষকরা জানান, ব্যাংকগুলোয় অস্বাভাবিক ভিড় ছিল। এ ভিড় পার হয়ে যারা গেছেন তাদের ব্যাংক থেকে টাকা দেওয়া হয়নি। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভাতার টাকা পরে নিতে হবে।

শিক্ষকরা জানান, লকডাউনের আগে মঙ্গলবার ছিল শেষ কর্মদিবস। তাও ব্যাংকের লেনদেন হয় ৩টা পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে সারাদেশে পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী কীভাবে টাকা তুলবেন?

ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষকরা বলছেন, সরকারি চাকরিজীবীরা ১০ এপ্রিলের মধ্যে ভাতা পেলেও বেসরকারি শিক্ষকদের শেষ সময়ে কেন দেওয়া হলো? শিক্ষা ক্যাডারের সরকারি কলেজ, স্কুল শিক্ষক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বৈশাখী ভাতার টাকা ১০ এপ্রিলের আগেই পেয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকে বৈশাখী ভাতা পাওয়া শুরু করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বৈশাখী ভাতা ও ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর ওই বছর থেকেই শিক্ষকরা ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাচ্ছেন। এমপিওভুক্ত প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে এ বছরও মূল বেতনের ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা পাবেন।

এনএম/এসকেডি/জেএস