খুলনায় এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিন

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে খুলনায় এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিন চলছে। শনিবার (০৫ জুন) সকাল থেকেই বেশিরভাগ দোকানপাট-শপিংমল বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার (৪ জুন) শুরু হওয়া এ বিধিনিষেধ চলবে ১০ জুন পর্যন্ত।

করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। বিধিনিষেধ অনুযায়ী রূপসা, খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা উপজেলা এবং খালিশপুর থানায় জরুরি সেবা ছাড়া সব মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ রয়েছে।

তবে নগরীর সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আর কাঁচাবাজারে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতাও আগের মতোই কম। কঠোর বিধিনিষেধ জারি হলেও সচেতনতা নেই সাধারণ মানুষের মাঝে। কিছু কিছু বন্ধ দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ও বসে রয়েছেন মালিক-কর্মচারী। এসব দোকানের সাটার বন্ধ থাকলেও অভিনব পদ্ধতিতে চলছে বেচাকেনা।

নগরীর ডাংবালা, ফেরিঘাট, শিববাড়ি, শান্তিধাম, রয়েল মোড়, ময়লাপোতা মোড়, গল্লামারী, জোড়াগেট, আলমনগর, খালিশপুর বিআইডিসি রোড, চিত্রালীবাজার, হাউজিং বাজারসহ বেশ কিছু স্থানে ঘুরে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে।

নগরীর ডাকবাংলো মোড়ের সব দোকানপাট বন্ধ, খোলা রয়েছে ফলের দোকান। বন্ধ রয়েছে খুলনা শপিং কমপ্লেক্স, রব মার্কেট, খুলনা নিউমার্কেট, রেলওয়ে মার্কেটের কাপড়ের দোকানগুলো। বন্ধ রয়েছে স্টেশন রোডের অধিকাংশ হার্ডওয়্যারের দোকান। কেউ কেউ অর্ধেক সাটার নামিয়ে বসে আছেন ক্রেতার অপেক্ষায়।

যথারীতি খোলা রয়েছে বড় বাজারের মুদি দোকানগুলো। স্বাভাবিক দিনের চেয়ে তুলনামূলক ক্রেতার ভিড় কম থাকলেও মাস্ক নেই অধিকাংশের মুখে। খোলা রয়েছে হেরাজ মার্কেট। ওষুধের দোকানগুলোতে ক্রেতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

ভিন্ন চেহারা বড় বাজারের পাইকারি ছিট-কাপড়ের দোকানগুলোর। অর্ধেক সাটার নামিয়ে চলছে কেনাবেচা। কখনো সাটার অর্ধেক খুলছে, আবার বন্ধ হচ্ছে। এখানেও কর্মচারীরা চোখের ইশারায় ডাকছেন পথচারী ও ক্রেতাদের।

এদিকে ক্লে রোডের কসমেটিকসের দোকানগুলোর সাটার বন্ধ রেখে ভেতরে চলছে বেচাকেনা। কাস্টমার আসলেই খুলছে সাটার, দোকানে ঢুকলে ফের বন্ধ। এ‌দি‌কে জেলা প্রশাস‌নের নি‌র্দেশ উ‌পেক্ষা ক‌রে দোকান খোলার অপরা‌ধে নগরীর স্যার ইকবাল রো‌ডের এক‌টি দোকানে জ‌রিমানা ও সিলগালা করা হ‌য়।

পু‌লিশ জানায়, বেলা ১১টায় স্যার ইকবাল রো‌ডের কার্ড সেন্টার খু‌লে বেচা‌কেনা শুরু ক‌রে। তখন ভ্রাম্যমাণ আদাল‌তের এক‌টি টিম সেখান থে‌কে যাওয়ার সময় ম্যাজি‌স্ট্রেটের গা‌ড়ি দে‌খে দোকান মালিক কর্মচারী‌কে রে‌খে সট‌কে প‌ড়েন।

নির্বাহী ম্যাজি‌স্ট্রেট ইসমাঈল হো‌সেন দোকান মা‌লিক‌কে না পে‌য়ে কর্মচারী বাবু‌কে ১ হাজার টাকা জ‌রিমানা ক‌রেন। এরপ‌র পু‌লি‌শে পাহারায় দোকান‌টি সিলগালা ক‌রে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এ সংক্রান্ত এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন।

এতে উল্লেখ করা হয় মহানগরীর খুলনা সদর, খালিশপুর ও সোনাডাঙ্গা থানাধীন সব দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ থাকবে। কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি দোকান বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান ও ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে। ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে। হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো পার্সেলকৃত অথবা প্যাকেটজাত খাবার সরবরাহ করতে পারবে। সন্ধ্যার পর কোনো রাস্তার মোড়ে একের অধিক ব্যক্তি অবস্থান করা বা একসঙ্গে চলাফেরা করতে পারবে না।

মোহাম্মদ মিলন/এমএসআর