নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মামুন নামে এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় এলাকাবাসী ওই ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন।

মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত সাড়ে ৯টায় রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সালাহ উদ্দিন কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বিকেলে উপজেলার ভূলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে সালাহ উদ্দিন কাদের বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এলাকা থেকে গা ডাকা দিয়েছিলেন উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন খোকা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদলের লোকজন ও এলাকাবাসী ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকাকে আটক করে। এ খবর জেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা ও সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম বাবু জানতে পেরে তাকে ছাড়িয়ে নিতে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়েন। এ সময় এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী মামুন হোসেন (৩৫) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে ধাওয়া করলে পালিয়ে যান বাবু। পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী ছাত্রলীগ নেতা খোকাকে গনধোলাই দিয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।

গুরুতর আহত ব্যবসায়ী মামুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আহত ব্যবসায়ী মামুনের ভাই বলেন, বিকেলে মোটরসাইকেলে তিনজন ব্যক্তি আসেন। তাদের মধ্যে একজন হেলমেট পরা এবং বাকি দুজনের মুখে রুমাল পেঁচানো ছিল। এদের মধ্যে বাবু নামে একজনকে চিনতে পেরেছি। তিনি গুলি করেন।

মামুনের স্ত্রী বলেন, আমি বাসায় ছিলাম না। বাবার বাড়িতে গিয়েছিলাম। পরে বিকেলে জানতে পারি আমার স্বামীকে গুলি করা হয়। তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না। তিনি নির্দোষ।

জানা যায়, সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম বাবু উপজেলা যুবদলের সভাপতি প্রার্থী। তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা।

অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম বাবু অস্বীকার করে বলেন, আমি শুনেছি ছাত্রলীগের খোকনকে লোকজন ধরছিল। সেখানে গোলাগুলি হইছে। কিন্তু আমি সেখানে ছিলাম না। আমি বাসায় ছিলাম।

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনার পর সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানান রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সালাহ উদ্দিন কাদের।

তিনি বলেন, সংঘর্ষের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহতের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ থানায় জমা পড়েছে, মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি৷

মেহেদী হাসান সৈকত/এএমকে