হাতিয়ার সেই পুকুরে কুমির নেই, গুইসাপ দেখে আতঙ্ক : বন বিভাগ
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় একটি পুকুরে কুমির দেখা যাওয়ার গুঞ্জনে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুকুরে বিশাল আকৃতির একটি কুমির দেখা গেছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার (২৫ জুন) বিকেল থেকে হাতিয়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের মাসুদ শরীফের বাড়ির ওই পুকুরে উৎসুক জনতার ভিড় জমে। কুমির আতঙ্কে রাত জেগে পাহারাও দেন এলাকাবাসী।
বিজ্ঞাপন
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিস ও বনবিভাগের একটি দল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণীটিকে শনাক্ত বা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে বন বিভাগ কুমির শনাক্তের জন্য পুকুরে জাল ফেলে অনুসন্ধান চালায়। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে তারা কোনো কুমিরের অস্তিত্ব পাননি। বরং তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, এলাকাবাসী যে প্রাণীটিকে কুমির বলে সন্দেহ করছে, সেটি সম্ভবত একটি বড় আকৃতির গুইসাপ।
বিজ্ঞাপন
উপকূলীয় বন বিভাগ নোয়াখালীর বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্ক দূর করতে আমরা পুকুরে জাল ফেলি। ১০ জন অভিজ্ঞ জেলে পুকুরে নামেন কিন্তু কোনো কুমির পাওয়া যায়নি। আমরা ধারণা করছি, বড়সড় গুইসাপ দেখে মানুষ কুমির মনে করেছে। পুকুরটির চারপাশে পাকা দেওয়াল এবং আশপাশের অবস্থা থেকে আমরা শিউর হয়েছি কোনোভাবেই কুমির প্রবেশ করা সম্ভব নয়। তবুও বিষয়টি নজরে রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
এদিকে, প্রাণীটি যাই হোক না কেন, হঠাৎ করে এমন একটি বড় আকৃতির জীব দেখে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অনেকে এখনো নিরাপত্তার কারণে পুকুর এলাকায় শিশুদের যাওয়া নিষেধ করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা হাফেজ সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার বিকেলে পুকুরের পানিতে বিশাল কিছু একটা ভেসে উঠতে দেখি। তখনই সবাই মিলে চিৎকার করি। পরে অনেকেই একে কুমির বলেই ধরে নেয়।
পুকুরের মালিক মাসুদ শরীফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিন দিন আগে তরকারি দোকানদার ওলি ভাই তার রান্নাঘরের পাশে একটি কুমির দেখতে পান। তারপর তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু কুমিরটির বিশাল আকৃতি দেখে তারা সবাই ভয় পেয়ে যান। আশপাশের সবাইকে সতর্ক করেন।
তিনি আরও বলেন, বুধবার বিকেলে তার স্ত্রী পুকুরে কুমিরটি দেখতে পান। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগকে জানালে তারা এসে দেখে গেলেও উদ্ধার না করেই ফিরে যায়। প্রথমে কেউ বিশ্বাস না করলেও পরে কয়েকজন কুমিরটি দেখেছেন বলে জানান। পুকুরে কুমিরটি মাথা ও পিঠ তুলে ভেসে উঠেছিল। এরপর রাতভর আতঙ্কে বাড়ির লোকজন পাহারা দিয়েছেন। আজ বন বিভাগ জাল ফেলে কোনো কুমির পায়নি। তবে আমাদের মাঝে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
হাসিব আল আমিন/এএমকে