তাড়াশ-নওগাঁ সড়কে খানাখন্দ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ-নওগাঁ সড়কের প্রায় দশ কিলোমিটার সড়কজুড়ে রয়েছে খানাখন্দ। দেখলে মনে হতে পারে যেন মাছ চাষের ছোট ছোট পুকুর। বর্ষার আগেই উপজেলার খুঁটিগাছা থেকে নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কটির অধিকাংশ স্থান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এ সড়কে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। সড়কের বেহালদশার কারণে বর্ষায় জনগণের দুর্ভোগ আরও কয়েকগুণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ভোগান্তি এবং সড়কের এ পরিণতির পেছনে মাটিবাহী ভারী গাড়ির অতিরিক্ত চলাচল ও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন তারা।

স্থানীয়দের দাবি, তাড়াশ-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে কয়েক বছর ধরে। যোগাযোগে অচলাবস্থার কারণে বারবার হোঁচট খাচ্ছে উপজেলার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবেই মূলত এ সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। 

খানাখন্দের কারণে এ সড়ক অনেকটাই চলাচল অনুপযোগী। এ সড়ক দিয়ে তাড়াশ উপজেলার দক্ষিণ তাড়াশের প্রায় ২০টি গ্রাম ও নওগাঁর হাটের আশেপাশের লাখো মানুষ ও ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করেন প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষক প্রতি মৌসুমে হাজার হাজার মণ ধান বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যান এ সড়ক ধরেই।

তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বন্যা পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় তাড়াশ-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কের খুঁটিগাছা মোড় থেকে নওগাঁ হাট পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ৯ দশমিক ৯ কিলোমিটার। যোগাযোগের এ দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বরে বন্যা পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় এ কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় সাত কোটি ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৮৭৩ টাকা। 

টেন্ডারের মাধ্যমে ঢাকার ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাঁচ কোটি ৫৩ লাখ ৮৬ হাজার ৬৮৮ টাকায় এ সড়কের কাজ পায়। এরপর সড়কের একপাশে এজিং (৫ শতাংশ) কাজ করে লাপাত্তা হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এখনও কাজ বন্ধ। অথচ পূর্বের টেন্ডারে কাজ সমাপ্তির মেয়াদ ছিল ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

স্থানীয়রা ঢাকা পোস্টকে জানান, তাড়াশ-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। কবে নাগাদ এ কষ্টের অবসান হবে, সে অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। এ সড়ক দিয়ে নওগাঁ হাট ও মাজারসহ উপজেলায় লাখো মানুষের যাতায়াত। দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। বর্ষাকাল চলে আসছে। বৃষ্টির পানিতে সড়কে খানাখন্দে পানি জমে যেন ছোট ছোট পুকুর হয়ে যায়। তাই সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন তারা। 


 
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক গোপাল চন্দ্র ঘোষ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্ষায় সড়কটি দেখলে মনে হয়, এটি তো রাস্তা নয়, যেন মাছ চাষের ছোট ছোট পুকুর। এলাকাবাসী ও এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সড়কটি দ্রুত মেরামত করা দরকার বলেও জানান তিনি।

তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু সাইদ ঢাকা পোস্টকে জানান, পূর্বের টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে টেন্ডার দিতে প্রায় বছরখানেক সময় লাগবে। তবে শিগগিরই সড়কটি সাময়িকভাবে মেরামতের কাজ করা হবে, যেন লোকজন চলাচল করতে পারে।

এ বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি। 

শুভ কুমার ঘোষ/আরএইচ