ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার সাক্ষী সেই মাদরাসার পরীক্ষাকেন্দ্র (সোনাগাজী-০১, কেন্দ্র কোড-৬৪৫) পুনর্বহাল করেছে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড। বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, ঢাকার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ফেনী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্যাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ফেনী জেলা প্রশাসক ও সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা সদরে অবস্থিত সোনাগাজী-০১ (কেন্দ্র কোড-৬৪৫) কেন্দ্রে ২০১৯ সালে আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলে ঘটনাটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এ ঘটনা ঘটে। তাই সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা কেন্দ্রের ভেন্যুটি বাতিল করে মতিগঞ্জ আর.এম.হাট কে উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ভেন্যু নির্বাচন করা হয়।

ওই কেন্দ্রটি উপজেলার সদর থেকে চার কিলোমিটার দূরে হওয়ায় ফেনী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনাগাজী মাদরাসার ভেন্যুটি পুনর্বহালের সুপারিশ করেন। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেন্যুটি পুনর্বহাল করে।

২০১৯ সালে এ কেন্দ্র বাতিল করায় সোনাগাজী বাজার থেকে তিন কিলোমিটার দূরে মতিগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে হয়েছে ৭১০ জন পরীক্ষার্থীকে। এর আগে প্রতিবছর উপজেলার ১৯টি দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরা পৃথক দুটি কেন্দ্র বখতারমুন্সি ফাজিল মাদরাসা ও সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষায় দিত।

উল্লেখ্য, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা যৌন নিপীড়নের মামলা প্রত্যাহার না করায় ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে ডেকে নিয়ে আলিম পরীক্ষার্থী ওই মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে ছাদের উপর হাত-পা বেঁধে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। চার দিন পর ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রাফি। ওই মামলায় ২৪ অক্টোবর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ ১৬ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।

হোসাইন আরমান/এসএসএইচ