এবার জলাবদ্ধতা নিরসনে মাঠে নেমেছেন নারায়ণগঞ্জের ডিসি
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে জলাবদ্ধতার যন্ত্রণা সহ্য করে আসছে নারায়ণগঞ্জবাসী। সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যেত রাস্তাঘাট, স্থবির হয়ে পড়তো জনজীবন। সরকারিভাবে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের অভাবে সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি।
জলাবদ্ধতার এমন দীর্ঘমেয়াদি ভোগান্তির বিরুদ্ধে এবার মাঠে নামলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। জনবান্ধব এ প্রশাসক স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুরোধ পাওয়ার পর নিজে জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করেন, গঠন করেন একটি অনুসন্ধানী কমিটি। সেই কমিটির প্রতিবেদন হাতে পেয়ে তিনি মন্ত্রণালয় পর্যন্ত পৌঁছে দেন বিষয়টি—পরিশেষে, প্রকল্প অনুমোদন।
বিজ্ঞাপন
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) থেকে শুরু হলো ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ’ কর্মসূচির অধীনে জলাবদ্ধতা নিরসন অভিযান। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ফতুল্লার কাইয়ুম এলাকার একটি খাল পরিষ্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে এই অভিযান সূচনা করে।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসক বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরের মোট ৯২ কিলোমিটার খাল থাকলেও এর মধ্যে অন্তত ১৭ কিলোমিটার খাল অবৈধ দখল, ময়লা-আবর্জনা ও দৃষ্টিকটুভাবে অবরুদ্ধ হয়ে আছে। পানি প্রবাহ একপ্রকার বন্ধই হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের লক্ষে এবার ৯টি খালের ৫৬টি স্থানে প্রায় ১১ কিলোমিটার খাল উদ্ধার ও পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, বাকি যে বেদখল খালগুলো আছে সেটা সিটি কর্পোরেশনের সাথে কথা বলেছি। সিটি কর্পোরেশন আমাকে বলেছে,বেদখল করা খালগুলো ডিমার্কেশন করে দিলে,তারা কাজ শুরু করবে। তাই আমি দ্রুতই সেই খালগুলো ডিমার্কেশন করে দিচ্ছি দ্রুত।
জেলা প্রশাসক বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরের যত সমস্যার কথা বলা হয়, তার মধ্যে জলাবদ্ধতা সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী এবং কষ্টদায়ক। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় শহরের মানুষ এই দুর্ভোগ সহ্য করেছে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, এই জলাবদ্ধতাকে সহনীয় পর্যায়ে আনবো। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আমরা খালগুলো শুধু পরিষ্কার করেই থেমে থাকবো না। পরিকল্পনা রয়েছে এগুলোকে মাছের অভয়ারণ্য হিসেবেও গড়ে তোলার। তবে নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি অনুরোধ, খাল পরিষ্কারের পর কেউ যেন আবারও আবর্জনা কিংবা আসবাবপত্র ফেলে তা ভরাট না করেন।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাফর সাদিক চৌধুরী, ফতুল্লা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আসাদুজ্জামান নূর, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আক্তার, সিদ্ধিরগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবযানি করসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
এমএএস