ফাইল ছবি

নির্বাচন এলেই পাড়া মহল্লায় বেড়ে যায় শোরগোল। প্রার্থী ও সমর্থকদের মাঝে দেখা যায় নির্বাচনের আমেজ। এ আমেজ পাড়ার চায়ের দোকান থেকে শুরু হয়ে মাইকিংয়ে গিয়ে শেষ হয়। এক সঙ্গে একাধিক মাইকের প্রচারণায় শব্দ দূষণ নিয়ে ভোটাররা সব সময়ই সমালোচনা করে থাকেন। 

এই সমালোচনা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীরা ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন। নাগরিকদের শব্দ দূষণের কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে তারা মাইকিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পৌর বাসিন্দারা।

সুনামগঞ্জ সদর পৌরসভার ছোট্ট একটি এলাকা ৫ নম্বর ওয়ার্ড। পৌরসভা নির্বাচনে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ৯জন প্রার্থী। তারা হলেন- গোলাম সাবেরীন (টেবিল ল্যাম্প), বিমান কান্তি রায় (পানির বোতল), আবু বক্কর সিদ্দিক (ব্রিজ), আলী আছহাব আহমদ (পাঞ্জাবি), এমদাদুল হক (ডালিম), গণেশ রায় (ব্লাক বোর্ড), নীহার রঞ্জন দাস (গাজর), মো. সামছুল ইসলাম পারভেজ (উটপাখি), মো. সাহিন মিয়া (টিউব লাইট)। 

ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন এই ওয়ার্ডের প্রার্থীরাও। তবে মাইকিং নয় ব্যতিক্রমী সব উদ্যোগের মধ্য দিয়ে প্রচারণা চালাছেন। এর মধ্যে রয়েছে পোস্টারিং, লিফলেট বিতরণ। প্রার্থীদের এ রকম উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন ভোটাররা।

৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর গোলাম সাবেরীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সুনামগঞ্জ শহরটি ছোট। ছোট্ট একটি শহরে এতো প্রার্থী; সকল প্রার্থী যদি মাইকিং করে, তাহলে ভয়াবহ শব্দ দূষণ হবে। ফলে ভোটারদের মানসিক ও শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই আমরা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা মিলে মাইকিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

ওই ওয়ার্ডের আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী বিমান কান্তি রায় বলেন, ‘আমরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাব। এজন্য মাইকিং করার প্রয়োজন নেই। ভোটারদের কোনো রকমের অসুবিধা হোক আমরা চাইব না। মানবিক ও পরিবেশ বান্ধব ওয়ার্ড চাই আমরা’।

৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার পান্ডব দে বলেন, এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। প্রতিবার নির্বাচন আসলেই মাইকিংয়ের জন্য বাসায় থাকা যেত না। মানসিক যন্ত্রনায় পড়ে যেতাম। ছেলে মেয়েরও সমস্যা হতো। তবে এবার মেয়র প্রার্থীরা যদি মাইকিং না করেন তবেই আমাদের ওয়ার্ডে শব্দ দূষণ হবে না।

৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিক্ষাবিদ যোগেশ্বর দাশ এই উদ্যোগকে অনুকরণীয় উল্লেখ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সহনীয় মাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত শব্দ মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। পাড়া মহল্লায় উচ্চ শব্দে মাইকিংয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন বৃদ্ধ ও রোগীরা। ইতিবাচক ও সঠিক উদ্যোগের জন্য তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। 

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সদর পৌরসভার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। আর সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ জন প্রার্থী লড়ছেন। 

মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নাদের বখত, বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী মুর্শেদ আলম এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাতপাখা প্রতীকের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৬ জানুয়ারি। নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় পাঁচ হাজার ভোটার।

এসপি