পাবনার সাঁথিয়ায় সেলিম হোসেন (২৫) নামের এক অটোরিকশাচালকে পায়ের রগ ও গলাকেটে হত্যা করার ঘটনায় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করছে পুলিশ। ছিনতাইকৃত অটোবাইক উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি জানিয়েছেন পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান।

আটককৃতরা হলেন সাঁথিয়ার ছোন্দহ এলাকার আবু সাঈদের ছেলে রাসেল হোসেন (২২), বহলবাড়ি এলাকার সোলেমান শেখের ছেলে মো. রানা শেখ (২১), আল আমিনের স্ত্রী শীলা খাতুন (২১), বহলবাড়ি পূর্বপাড়ার ওয়াজেদ সরদারের ছেলে মো. হোসেন আলী (১৮), বৃহস্পতিপুর গ্রামের মো. মৃত রায়হান হোসেনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৩৮), আরেক আসামি আল আমিন হোসেন পলাতক রয়েছে, সে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সহিত জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এ তথ্য জানান। এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকাল ৯টার দিকে সাঁথিয়ার মাধপুর বহলবাড়ি মাঠ থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকেই ব্যাপক চাঞ্চল্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

নিহত সেলিম সাঁথিয়া উপজেলার আতাইকুলা থানার ভূলবাড়িয়া ইউনিয়নের মাধপুর গোছাইপাড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন প্রামাণিকের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, পুলিশি তদন্ত ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সাঁথিয়া থানার একটি টিম পুলিশ সুপারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে গত (১২ জুন) ভোরে ঢাকা জেলার ধামরাই থানাধীন নওগাঁ বাজারের জনৈক বক্করের ইটভাটা থেকে আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী শীলা খাতুনকে অটোবাইকচালক সেলিম মাঝে মাঝেই উত্ত্যক্ত করত এবং কুপ্রস্তাব দিত। বিষয়টি শীলা তার স্বামী আল-আমিনকে জানালে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত গ্রেফতারকৃত আসামিরা আল-আমিনের বাড়িতে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুরে সেলিমকে হত্যা এবং তার ইজিবাইকটি হত্যার পরে বিক্রি করে টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা মোতাবেক আসামিরা একই তারিখ বিকাল ৫টার দিকে মাহমুদপুর বাজারে একত্র হয়। সেখান থেকে রিজার্ভ ভাড়ার কথা বলে ভিকটিম সেলিমকে মাহমুদপুর বাজারে আসতে বলে। সেলিম মাহমুদপুর বাজারে এলে আসামি রাসেল, রানা, আল আমিন, সাগর এবং হোসেন ভিকটিম সেলিমের ইজিবাইকে করে বহালবাড়ীয়ার কালুকাটা নামক স্থানে পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পনামতো ইজিবাইকটি মোড়ে রেখে কালুকাটা চকে আইলের ওপর বসে গাজা সেবন করতে থাকে। রাত ৯টার দিকে ভিকটিম সেলিম নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়লে আসামিরা চাকু ও হাতুড়ি দিয়ে নৃশংসভাবে সেলিমকে হত্যা করে।

আসামিরা সেলিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে ইজিবাইকটি নিয়ে একই রাতে আতাইকুলা বাজারে যায় এবং আনুমানিক রাত ১০টার দিকে ভাংরির দোকানদার দেলোয়ারের কাছে ৩১ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ইজিবাইকটি বিক্রি করে নিজেদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি করে নেয়।

সাঁথিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহা. সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন রাতেই ছেলের বাবা তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেছে। ৫ জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রাকিব হাসনাত/এনএ