চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলার অন্যতম আসামি তুহিন সিদ্দিকী অমি। পরীমণির অভিযোগ, এই অমিই পরিকল্পিতভাবে তাকে বোট ক্লাবে নিয়ে গিয়েছিলেন। 

ফলে আলোচিত এ ঘটনায় বারবারই ঘুরে ফিরে আসছে অমির নাম। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার গুল্ল্যাহ গ্রামে।

জানা যায়, ওই গ্রামে অমিদের বিলাসবহুল একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি রয়েছে। তবে বাড়িটিতে কেউ থাকেন না। মাঝেমধ্যে অমি এবং তার বাবা সেখানে যান। বাবা-ছেলে দুজনই আদম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

সরেজমিন টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার গুল্ল্যাহ গ্রামে দেখা যায়, বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়িটির চারদিকের দেয়াল বিভিন্ন নকশায় সাজানো। পাশের সাদা রঙের বাড়িটি তার চাচার, তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। এছাড়া ওই গ্রামেই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে অমির নামে একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। হাসপাতালের পেছনেই মসজিদ ও মাদরাসা নির্মাণ করা হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অমির বাবা তোফাজ্জল হোসেন তোফা ১৯৯৫ সালে সিঙ্গাপুরে যান। সেখান থেকেই শুরু করেন আদম ব্যবসা। একপর্যায়ে অমিকেও সেই ব্যবসায় সম্পৃক্ত করেন। এরপর বাবা-ছেলে মিলে সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার, দুবাইসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানো শুরু করেন। ঢাকা ও আশুলিয়া এলাকায় দুটি ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে তাদের। 

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের পাশেই বাসাইলের বয়ড়ার গুল্ল্যাহ এলাকায় ১৮৫ শতাংশ জমির ওপর অমির নামে একটি জেনারেল হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। পাশেই অমির ছেলে আয়াত ও মেয়ে জান্নাহের নামে সুপার মার্কেট ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যা জান্নাহ গ্রুপ অব কোম্পানি নামে পরিচালিত হচ্ছে। হাসপাতালের পেছনে ২০১১ সালে মক্কা মদীনা হাজী আব্দুল মান্নান ময়মন নেছা কওমি মাদরাসা নামে একটি মাদরাসা, এতিমখানা ও মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।

আব্দুর রউফ নামে এক এলাকাবাসী বলেন, তারা আগেই থেকে ধনী। তারা দরিদ্র মানুষদের আর্থিক সহায়তা করে আসছে। এলাকায় তাদের নামে কোনো অভিযোগ বা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য নেই।

সুরুজ মিয়া নামে আরেক এলাকাবাসী বলেন, তাদের বাড়িটি হাজী বাড়ি নামে পরিচিত। এই গ্রাম ছাড়াও অন্যান্য গ্রামের মানুষজনকেও আর্থিক সহযোগিতা ছাড়াও অনেক মসজিদ মাদরাসায় দান করেছেন। অনেক অসহায় পরিবারের মেয়ের বিয়েতেও দান খয়রাত করেছেন। তবে অমি ছোট থেকেই ঢাকায় থাকত।

স্থানীয়রা জানান, অমির জন্ম ঢাকাতেই। এলাকায় বছরে একবার-দুইবার যেতেন। গ্রামের বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ নানা কাজে তিনি আর্থিকভাবে সহায়তা করতেন। গ্রামের মানুষ তাকে ভালো মানুষ হিসেবেই চেনেন।

অমির বাবা তোফাজ্জল হোসেন তোফা বলেন, স্কুলজীবনে নায়িকা পরীমণির সঙ্গে অমির বন্ধুত্ব ছিল। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে ওঠার পর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ ছিল না।

অমির বাবা আরও বলেন, অমি ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবের সদস্য। ভবিষ্যতে ক্লাবগুলোতে হয়ত বড় পদে যেত। এজন্য প্রতিপক্ষ সামাজিকসহ তার ব্যবসায়িক ক্ষতি করার জন্য নায়িকা পরীমণিকে দিয়ে তাকে মামলার আসামি বানিয়েছে।

এসপি/এনএফ