পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে দেলোয়ার ফরাজী নামে এক বৃদ্ধকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রাতে মো. আরিফুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করলে তা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়।

৩৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, গ্রামের একটি বাড়ির পাতার বেড়ার ভেতর থেকে ২-৩ জন বলছেন, এ মইশ (মহিষ) কার? এ মইশ (মহিষ) কার? ভিডিও’র ৯ সেকেন্ডের সময় এক বৃদ্ধকে টেনেহিঁচড়ে বাউন্ডারির ভেতর থেকে বের করে নিয়ে আসে এক যুবক। যুবককে থামাতে পেছনে থেকে এক নারী বাঁধা দিচ্ছেন। 

ভিডিও’র ১৮ সেকেন্ডের সময় যুবক শুধু বৃদ্ধের কাছে জানতে চাইছে, এ চোর মইশ (মহিষ) বেচ্ছে (বিক্রি করছে কে ) কেডা? এর মধ্যে বৃদ্ধের গায়ের গেঞ্জি ছিড়ে ফেলতে দেখা যায়। ভিডিওটির ২৫ সেকেন্ডের সময় বৃদ্ধের ঘাড় ধরে নদীর দিকে নিয়ে যাচ্ছেন যুবক আর বলছেন, মইশের ধারে চল। এই বলে বৃদ্ধকে ওপরে তুলে ফেলে যুবক। ৩৫ সেকেন্ডের সময় এক নারীকে বলতে শোনা যায়, ফিরোজ ভাই, ছাড়েন (বৃদ্ধ)। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার বৃদ্ধের নাম দেলোয়ার ফরাজী। দেলোয়ার রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য নাজমা বেগমের শ্বশুর। আর নির্যাতনকারী দেলোয়ারের ছোট ছেলে ফিরোজ। 

 নির্যাতনের শিকার দেলোয়ারের বড় ছেলে আলমাছ ফরাজী মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার স্ত্রী নারী ইউপি সদস্য। স্ত্রীর সঙ্গে বাবার কোনো মিল নেই। আমার বাবা পাগল প্রকৃতির মানুষ। আমার বিরোধী পক্ষ বাবাকে উস্কানি দেয় আর তিনি আমাদের বিভিন্ন ধরনের কটু কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বুধবার সকাল ৮টায় ছোট ভাই বাবাকে শুধু বলছে, আমার বড় ভাই (আলমাছ ফরাজী) কোন মহিষ চুরি করে নিয়ে আসছে সেটা বলেন? ছোট ভাই বাবার হাত ধরছে শুধু, কোনো মারধর করেনি। এ বিষয় নিয়ে বাবা একটি মামলাও করছে। আমার বাবা আমার ভালো থাকাটা চোখে দেখতে পারে না। কেউ চাই বাবাকে মারধর করতে?  

এ বিষয়ে ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য নাজমা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

চরমোন্তাজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখেছি। ওই বৃদ্ধ আদালতে একটি মামলাও দায়ের করেছে। গতকাল আসামি গ্রেফতার করতে আমরা গিয়েছিলাম। কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। 

তিনি আরও বলেন, একই ঘটনায় দুটি মামলা হয় না। আদালতে মামলা না হলে আমরা নিজেরা মামলা নিয়ে আসামি গ্রেফতার করতাম। আদালতে মামলা হওয়ায় ওই মামলায় ওয়ারেন্ট আছে। আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এসপি