পাবনার কাজিরহাট থেকে মানিকগঞ্জের আরিচা রুটে চলাচলকারী চারটি ফেরির দুটিই নষ্ট। আবার ফেরির পল্টুন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পারাপারে ধীরগতি রয়েছে। এতে কাজিরহাট ফেরিঘাট থেকে দুই কিলোমিটারজুড়ে চার শতাধিক গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।

রোববার (২০ জুন) সকাল ৯টায় কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এই নৌপথে চলাচলকারী চারটি ফেরির মধ্যে বেগম রোকেয়া ও বেগম সুফিয়া কামাল ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ পল্টুন হওয়ায় সম্প্রতি সেটি ভেঙে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এরপর আরেকটি পল্টুন স্থাপন করা হলে সেটিও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গাড়ি পারাপারে ধীরগতি দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে কাজিরহাট ফেরিঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।

মনির হোসেন নামে এক স্থানীয় যুবক জানান, পল্টুন সমস্যার কারণে পারাপারে ধীরগতি হওয়ায় প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গাড়ির মধ্যে থাকা যাত্রীদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেকে গাড়ির মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। 

গার্মেন্টস শ্রমিক শারমিন আক্তার বলেন, সকালে বাড়ি থেকে বের হয়েছি, অফিসে গিয়ে বিকেলের শিফটে কাজ ধরব বলে। এখন দেখছি অফিস করতে পারব না। অফিসের বসকে ফোন দিলেও তিনি বলেন, কাল সকাল থেকে অফিস করতেই হবে।

রোদেলা আক্তার মিথিলা নামে আরেকজন বলেন, সড়ক পথে অতিরিক্ত যানজটের কারণে দ্রুত যাওয়ার জন্য ফেরি পারাপার হয়ে ঢাকা যাচ্ছি। কিন্তু এখানকার চিত্র একই। কখন যে ঢাকায় পৌঁছাতে পারব, এটা নিয়ে টেনশনে আছি। 

পাবনা থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রাকের চালক মোস্তফা হোসেন বলেন, বার বার এই ঘাটে এসে আমরা বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছি। ঘাটের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষুব্ধ এই চালক বলেন, তিন ঘণ্টার রাস্তার জন্য এখন আমাকে দুই দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ভোরে আসছি ঘাটের সিরিয়ালই পাচ্ছি না। আল্লাহ জানেন কখন নাগাদ ফেরিতে উঠতে পারব।

তবে ঘাট কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, আরিচা ঘাটে পন্টুনে ওঠার রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহনের গতি ধীর হয়ে পড়েছে। ফলে সমস্যা আরও বেড়েছে। তারা জানিয়েছেন, পল্টুন সমস্যা ঠিক হয়ে গেলে ঘাটের পরিবেশ স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান বলেন, ঝুঁকিপুর্ণ পল্টুন দিয়ে গাড়ি পারাপারে এমন যাটজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি ঝুঁকিমুক্ত পল্টুন স্থাপন করার জন্য। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিরসনে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। আশা করি, অল্পদিনের মধ্যেই ঘাটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

রাকিব হাসনাত/এসপি