আদালতের হাজিরায় মামার বদলে ভাগনে, ধরা পড়ে কারাগারে
চাঁদাবাজি ও শ্লীলতাহানির মামলায় মামার বদলে আদালতে হাজিরা দিতে এসে ধরা পড়েছেন ভাগনে। আদালতে হাজিরা দিয়ে জেরার উত্তরও দিয়েছেন তিনি। শুনানি শেষে জামিন চাইলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে কারাগারে পরিচয় যাচাইয়ের সময় ধরা পড়ে, তিনি মামলার মূল আসামি নন, তার ভাগনে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে বুধবার (২২ অক্টোবর)।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, মো. শামীম আহম্মেদ (২৭), যশোর সদর উপজেলার ভেকুটিয়া গ্রামের জামশেদ আলীর ছেলে। তিনি তার ছোট মামা হাসানের পরিবর্তে আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। হাসান একই গ্রামের মন্টুর ছেলে। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার আবিদ আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ নভেম্বর, সদর উপজেলার ভেকুটিয়া এলাকায় রাকিবুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় যুবক নিশানুর রহমান অন্তরের নেতৃত্বে ৭-৮ জন চাঁদাবাজি করতে আসে। তারা রাকিবুলের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে হামলা চালিয়ে রাকিবুলের স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করে। ওই সময় নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে ৫৫ হাজার টাকা আদায় করে চলে যায় তারা। পরে রাকিবুল ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন। এই মামলার ৫ নম্বর আসামি হচ্ছেন হাসান। অভিযুক্তদের অনেকেই বিভিন্ন সময় হাজিরা দিয়ে জামিনে রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার সব আসামি হাজির হন। এ সময় হাসানের পরিবর্তে তার ভাগনে শামীম হাজিরা দেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে শামীমই কারাগারে যান।
বিজ্ঞাপন
পরবর্তীতে কারা কর্তৃপক্ষ আদালত থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী নাম, বাবার নাম ও ঠিকানা যাচাই করতে গিয়ে শামীমের কথাবারতায় অসামঞ্জস্য লক্ষ্য করে। তখন তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষা করে প্রকৃত পরিচয় শনাক্ত করা হয় সে হচ্ছে মো. শামীম আহম্মেদ।
আরও পড়ুন
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার আবিদ আহম্মেদ জানান, জিজ্ঞাসাবাদে শামীম স্বীকার করেন, হাসান তার ছোট মামা এবং তিনি আগেও ৩-৪ বার তার হয়ে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী শামীমের বিরুদ্ধে মামলা এবং হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে।
তবে কারা সূত্র বলছে, সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ও আসামির আইনজীবীর সহযোগিতা ছাড়া এমন জালিয়াতি সম্ভব নয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা বলেন, বিষয়টি শুনেছি। অনেক সময় মুহুরিদের ম্যানেজ করে আসামিপক্ষ এভাবে হাজিরা দেয়। কীভাবে ঘটনা ঘটেছে, তা খোঁজ নিচ্ছি।
রেজওয়ান বাপ্পী/এআরবি