বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ফেরত যেতে পরছেন না সেই ৬ ভারতীয় নাগরিক
অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে অন্তঃসত্ত্বাসহ গ্রেপ্তারকৃত ৬ ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের দিন পেছানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল ইসলাম এ সংক্রান্ত আদেশ দেন। আদালত আগামী ৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেন।
এর ফলে গত ২৬ সেপ্টেম্বরের কলকাতা হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ওই ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরার বিষয়টি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় ছয় নাগরিক হলেন- ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার মুরারই থানার বাসিন্দা মো. মন্নু শেখের ছেলে মো. দানেশ (২৮), মো. ভোদু শেখের মেয়ে সোনালী বেগম (২৬), সেরাজুল শেখের মেয়ে সুইটি বিবি (৩৩), আজিজুল দেওয়ানের ছেলে কুরবান দেওয়ান (১৬), ইমাম দেওয়ান (৬) এবং মো. দানেশের ছেলে মো. সাব্বির (৮)। তাদের মধ্যে সোনালী বেগম চারমাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গেছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক পিন্টু বলেন, আদালত আগামী ৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ওইদিন শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করা হবে বলে আমরা আশা করছি। এছাড়া গ্রেপ্তার ৬ জনই ভারতীয় নাগরিক। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। তারা আদালতে দোষ স্বীকার করতেও প্রস্তুত রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, গত ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী বেগমকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ সন্দেহে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার ঘটনাকে বেআইনি ঘোষণা করেছিল। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং ঋতব্রত মিত্রের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিলেন, অন্তঃসত্ত্বা সোনালীসহ আরও পাঁচজন ভারতীয় নাগরিককে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই রায়ে বিচারপতিরা বলেছিলেন, আইন অনুযায়ী বিদেশি সন্দেহে আটক হলে তার পরিচয় যাচাইয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। কিন্তু এই পরিবারকে মাত্র দুই দিনের মধ্যে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যা স্পষ্টতই আইনি নিয়মের পরিপন্থি। হাইকোর্টের এই রায় ভারতের অন্যান্য রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটি বড় জয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জানা গেছে, ভারতের দিল্লিতে ইটভাটায় কাজ করার সময় গত ২৬ জুন নারী ও শিশুসহ ওই ছয়জনকে ‘বাংলাদেশি’ দেখিয়ে ভারতীয় পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। এরপর তারা প্রায় দুই মাস ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আলীনগর এলাকায় অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। পরে বুধবার (২০ আগস্ট) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাদের আটক করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের একটি দল। এরপর নিজ দেশে ফেরত নেওয়ার জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং এজন্য তাদেরকে এক দিন পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে না পারায় তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আশিক আলী/আরএআর