সুদের টাকা দিতে না পারায় মারধরে নিহত
জানাজা শেষে সাবেক বিজিবি সদস্যের মরদেহ রাখা হলো মর্গে
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় মারধরের শিকার হয়ে আব্দুর রহিম (৫৭) নামে এক বিজিবি সদস্যের (তৎকালীন বিডিআর) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বাদ জোহর তার জানাজা সম্পন্ন হলেও দাফন করা হয়নি। ন্যায়বিচারের দাবিতে তার মরদেহ রাখা হয়েছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট লক্ষ্মীপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে।
নিহত আব্দুর রহিম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের মতলবপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ উল্যার ছেলে। তিনি সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়া বাজারে মিথিলা বেকারির মালিক ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
পরিবার জানায়, পিলখানা ট্র্যাজেডির সময় আব্দুর রহিম সরাইলে দায়িত্ব পালন করতেন। ওই ঘটনার পর তিনি চাকরিচ্যুত হন এবং ৯ মাস কারাভোগ করেন। পরে আরেক সাবেক বিজিবি (তৎকালীন বিডিআর) সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে আমিশাপাড়া বাজারে বেকারি ব্যবসা শুরু করেন।
পরিবারের দাবি, চার দিন আগে বাজারের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সুদের টাকা নিয়ে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার পর দুই দিন তিনি লক্ষ্মীপুরের বাড়িতে ছিলেন। বুধবার সকালে দোকান খুলতে গেলে ওই ব্যবসায়ী ২০-২৫ জন লোক নিয়ে বাজারের মাঝখানে তাকে মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হলে বুধবার রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে পরিবার জানায়।
বিজ্ঞাপন
নিহতের স্ত্রী জোবেদা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাস্তার পাশে স্বামীর অচেতন দেহ পড়ে থাকতে দেখে এক বৃদ্ধ আমাকে ফোন দেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর প্রথমে বলা হলো হার্ট অ্যাটাক। পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারি, বাজারের মাঝেই তাকে মারধর করে মৃত ভেবে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায়। তাই জানাজা শেষে দাফন করিনি। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত দাফন দেব না।
নিহতের আত্মীয় আনোয়ার হোসেন বলেন, আব্দুর রহিম খুব সাদাসিধে মানুষ ছিলেন। চাকরি হারিয়ে শূন্য হাতে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। ন্যায়বিচারের দাবিতে পরিবারের অবস্থানের কারণে এখনো দাফন সম্পন্ন হয়নি।
সোনাইমুড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে, তবে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর হাসপাতালে রাখা হয়েছে। পরিবার অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মারধরের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে, তা যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
হাসিব আল আমিন/এআরবি