নীলফামারীতে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। রোববার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়াউদ্দিন মাহমুদ এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নীলফামারী সৈয়দপুরের কামারপুকুর কাঙ্গালু পাড়ার মতিয়ার রহমানের ছেলে ছামিউল ইসলাম শুভ (২৫) ও আব্দুল করিমের ছেলে মো. আনোয়ারুল হক (৩৫)। 

জানা যায়, দিনাজপুর পার্বতীপুরের এক যুবকের সঙ্গে ওই গৃহবধূর বিয়ের পর পারিবারিক কলহ চলছিল। পরে ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট অভিমান করে তিনি সৈয়দপুরের কিসামত কামারপুকুরের বাবার বাড়িতে চলে আসেন। কিছুদিন পর স্বামী তাকে তালাকনামা পাঠিয়ে দিলে সে মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এরপর ২২ আগস্ট ভোরে তাকে ঘরে দেখতে না পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজাখুঁজি শুরু করেন। সেদিন বাড়ির পাশে একটি মৎস্য খামারের পেছনে পতিত জমিতে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের পায়জামায় ‘আমার মৃত্যুর দাই কেউ না, আমি নিজে মৃত্যু করেছি’ লেখা একটি চিরকুট পাওয়া যায়। এ ঘটনার পরে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।  

আরও জানা যায়, মামলা দায়ের করার পরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তকালীন সময়ে চিরকুটের হাতের লেখার সূত্র ধরে তিনজন আসামিকে শনাক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আদালত ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে। সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুইজন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেক জনকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।

এবিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান খান রিনো বলেন, গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যা করে তার মরদেহ ফেলে রেখে যায় আসামিরা। পরে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে হাতের লেখার সূত্র ধরে তিনজন আসামিকে শনাক্ত করেন। সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুইজন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেক জনকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছে আদালত। আরেকজন আসামি শিশু হওয়ায় তার মামলা শিশু আদালতে এখনো চলমান আছে।

এআরবি