অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ পাওয়ার পরও নির্ধারিত সময়ে তা না দেওয়ায় দুদক আইনে এ মামলা করা হয়েছে।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে মামলার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন দুদক সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফি মোহাম্মদ নাজমুস সাদাত। তিনি জানান, রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জনাব আসাদুজ্জামান মামলাটি দায়ের করেন।

দুদকের এজাহারে বলা হয়, আনোয়ারুজ্জামান ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে প্রায় আট মাস সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির পরিচালক ছিলেন।

দুদকের অনুসন্ধানে নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তার নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, লন্ডনে তার নামে থাকা ৪ হাজার বর্গফুটের একটি বাড়ি ও ১ হাজার ৮০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের তথ্য তিনি গোপন করেছেন। একইভাবে পূর্বাচলে রাজউক বরাদ্দকৃত ৫ কাঠা জমির তথ্যও হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি।

দুদক জানায়, ২০২২-২০২৫ অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী আনোয়ারুজ্জামানের ঘোষিত মোট সম্পদ ৮৪ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮ টাকা। তবে এই সম্পদের গ্রহণযোগ্য দালিলিক উৎস পাওয়া যায়নি। পারিবারিক ব্যয় ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং মেয়র হিসেবে বেতন-ভাতা বাবদ ১০ লাখ ৫৩ হাজার টাকার তথ্য গ্রহণযোগ্য হলেও তার মোট অগ্রহণযোগ্য নীট সম্পদ দাঁড়ায় ৯৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮ টাকা, যা দুদকের মতে অবৈধভাবে অর্জিত।

সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দিতে গেলে দুদক কর্মকর্তারা তার বাসা তালাবদ্ধ পান। নিয়ম অনুযায়ী উপস্থিত সাক্ষী রেখে বাসার গেটে সম্পদ বিবরণীর মূল ফরম টানিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের দাবি, তিনি বর্তমানে ওই ঠিকানায় থাকেন না এবং তার স্থায়ী আবাস ও ব্যবসা লন্ডনে।

মামলার বিষয়ে দুদক সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফি মোহাম্মদ নাজমুস সাদাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্ধারিত সময়ে সম্পদের তথ্য জমা না দেওয়া বা সময় বৃদ্ধির আবেদন না করায় কমিশনের অনুমোদন নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলাটি (নন-সাবমিশন) দায়ের করেছেন। বিধি অনুসারে তদন্ত ও পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

মাসুদ আহমদ রনি/এআরবি