বর আশীকুজ্জামান চৌধুরী ও কনে বিপাশা আজিজ

ফরিদপুরে কনের দাবির মুখে এবং কনের পরিবারের প্রস্তাবে এক টাকার দেনমোহরে একটি বিয়ে হয়েছে। শুক্রবার (০৮ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের ঝিলটুলী মহল্লাস্থ মেজবান পার্টি সেন্টারে এ বিয়ের কাবিন এবং বিয়ে পরবর্তী ভোজের আয়োজন করা হয়।

কনে বিপাশা আজিজ (২৫) মাদারীপুরের সাহেবের চর মহল্লার বাসিন্দা আজিজুল হক ও নাসরিন সুলতানার একমাত্র মেয়ে। বিপাশা ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তবে বর্তমানে এ দম্পতি ফরিদপুর শহরের আলীপুর মহল্লায় বসবাস করেন।

বর আশীকুজ্জামান চৌধুরী (৩০) ফরিদপুর শহরের কুঠিবাড়ি কমলাপুর মহল্লার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান চৌধুরী ও তাহমিনা চৌধুরীর ছেলে। আশীকুজ্জামান ব্যবসা করেন।

বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া অতিথিরা জানান, কনে আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন; তিনি যেহেতু আর্থিকভাবে সচ্ছল সেজন্য বিয়ের দেনমোহর ধরবেন এক টাকা। কিন্তু বিয়ের অনুষ্ঠানে কাজি দেনমোহরের জায়গায় দুই লাখ টাকা লিখেন। এ ঘটনা জানার পর মেয়ের মা ও মেয়ের সিদ্ধান্ত জানিয়ে এক টাকা দেনমোহর লেখান।

বর আশীকুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে কনে বিপাশা আজিজ

বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ফরিদপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি আওলাদ হোসেন বলেন, সাধারণত দেখা যায় কনেপক্ষই কাবিনের সময় দেনমোহর বাড়িয়ে দেন। সেক্ষেত্রে এটি ব্যতিক্রম। আর্থিকভাবে সচ্ছল এক নারীর আত্মমর্যাদারক্ষার প্রতীকও বটে এ বিয়ের দেনমোহর।

তবে এক টাকার দেনমোহরকে সাধুবাদ জানাতে পারেননি নারী নেত্রী বেসরকারি আইনি সহায়তা প্রদান প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ফরিদপুরের সমন্বয়কারী শিপ্রা গোস্বামী।

তিনি বলেন, মুসলিম বিয়ে একটি চুক্তি। দেনমোহর নারীর হক। স্বামীর আর্থিক সংগতি ও নারীর সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে দেনমোহর নির্ধারিত হয়।

শিপ্রা গোস্বামী বলেন, দেনমোহরের ব্যাপারে আবেগের স্থান নেই। আবেগের বশে দেনমোহর এক টাকা লেখা যেতে পারে। কিন্তু এটি মোটেও বাস্তবসম্মত নয়। কেননা নারী বর্তমানে সচ্ছল হতে পারেন। কিন্তু আগামীতে তিনি সচ্ছল নাও থাকতে পারেন। এজন্য দেনমোহরের ব্যাপারে ছাড়ের সুযোগ নেই।

এএম