কুষ্টিয়া জেলার  ছয়টি উপজেলায় ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। গত এক সপ্তাহে অন্তত সহস্রাধিক শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১ জন শিশু ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম।

সরেজমিন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নার্সরা। আর শিশু রোগীর মা ও স্বজনরা খাওয়ার স্যালাইন ও ওষুধ নেওয়ার জন্য ভিড় করছেন নার্সদের টেবিলে।

গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়া জেলার ছয়টি উপজেলায় নতুন করে ১০১ জন শিশু ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে দৌলতপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ জন শিশু, ভেড়ামারায় ২১ জন, মিরপুরে ৫ জন, মিরপুরে ৫ জন, খোকসায় ৮ জন, কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ১০ জন শিশু এবং কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৪৬ জন শিশু ভর্তি হয়েছে।

জানা যায়, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট শয্যাসংখ্যা ১২। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ৯৭। শয্যাস্বল্পতার কারণে বাকি ৮৫ জন রোগী হাসপাতালের মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত রোগীদের মেঝেতে রাখায় অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানান হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সরা। চিকিৎসাধীন ৯৭ জন ডায়রিয়া রোগীর মধ্যে ৮৮ জন শিশু ও বাকি ৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক। 

কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন, অতিরিক্ত শীতের কারণে গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন গ্রাম থেকে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে দুই শতাধিক শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে ৯৭ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের মধ্যে ৮৮ জন শিশু। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।

তিনি আরও বলেন, শিশুদের ঠান্ডাজনিত সমস্যা এড়াতে বাড়তি সতর্ক হতে হবে অভিভাবকদের। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ হলে দেরি না করে হাসপাতালে এসে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ব্যবস্থা নিতে হবে।

রোটা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। শীতের কারণে রোটা ভাইরাস রোগে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। সাধারণত প্রতিবছর শীতকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের বেশির ভাগই রোটা ভাইরাসের সংক্রমণে অসুস্থ হয়। এই বছরেও শিশুরা ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের গুরুত্বের সঙ্গে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য জেলার সব সরকারি হাসপাতালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা চিকিৎসাধীন শিশু রোগীদের সাধ্যমতো চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম, সিভিল সার্জন, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়া জেলার ছয়টি উপজেলায় নতুন করে ১০১ জন শিশু ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে দৌলতপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ জন শিশু, ভেড়ামারায় ২১ জন, মিরপুরে ৫ জন, মিরপুরে ৫ জন, খোকসায় ৮ জন, কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ১০ জন শিশু এবং কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৪৬ জন শিশু ভর্তি হয়েছে।

ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু নাহিদের মা নাসরিন খাতুন বলেন, ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় আমার ছেলের ডায়রিয়া রোগ দেখা দেয়। এরপর তাকে নিয়ে গত বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করি। ডাক্তার ও নার্সদের চিকিৎসাসেবায় আগের চেয়ে অনেক সুস্থ হয়ে উঠেছে। এখন ভালো আছে। 

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, রোটা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। শীতের কারণে রোটা ভাইরাস রোগে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। সাধারণত প্রতিবছর শীতকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের বেশির ভাগই রোটা ভাইরাসের সংক্রমণে অসুস্থ হয়। এই বছরেও শিশুরা ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের গুরুত্বের সঙ্গে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য জেলার সব সরকারি হাসপাতালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা চিকিৎসাধীন শিশু রোগীদের সাধ্যমতো চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের তুলনায় শিশুরা বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। এ জন্য শিশুদের ডায়রিয়া দেখা দিলে বেশি বেশি খাওয়ার স্যালাইন, মায়ের বুকের দুধ, নরম সবজির খিচুড়ি খাওয়াতে হবে। তাহলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে বলে জানান সিভিল সার্জন।

এনএ