হলুদ ফুলে কৃষকের হাসি
তজুমদ্দিনে মাঠজুড়ে সবুজের বুকে হলুদের সমারোহ
দিগন্তজোড়া মাঠ। চারদিকে হলুদের সমারোহ। যেদিকে চোখ যায় হলুদ আর হলুদ। এই হলুদ ফুলে স্বপ্ন দেখছেন ভোলার তজুমদ্দিনের কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠজুড়ে সরিষা ফুল। ফুলে ফুলে মধু আহরণে ভিড় করছে দলবদ্ধ মৌমাছি। তবে অনেক জমিতেই ফুল শেষ হয়ে বীজ দেখা গেছে। বীজগুলো বেশ তরতাজা, যা ভালো ফলনের সম্ভাবনার জানান দিচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তজুমদ্দিন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁচড়া, শম্ভুপুর, চাঁদপুর, মলংচড়া ও সোনাপুর ইউনিয়নে এ বছর ৩০০ কৃষককে জমিতে সরিষা চাষের জন্য সরকার বীজ ও সার দিয়েছে। সে অনুযায়ী উপজেলায় ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সার, বীজ ও কীটনাশকের সংকট না থাকায় লক্ষমাত্রার চেয়েও অতিরিক্ত চাষাবাদের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন চাষিরা।
বিজ্ঞাপন
তজুমদ্দিন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে প্রায় ১ হাজার ৯৫০ মেট্টিক টন। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। তবে এ অঞ্চলের চাষিরা বারী, বিএডিসি, টরী ও বিনাসহ ৮ জাতের সরিষার চাষাবাদ করে থাকেন। যার ফলনও অনেক বেশি বলে জানান কৃষকরা।
তজুমদ্দিন উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের কৃষক মো. নোমান বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোনো ক্ষতি না হলে এবার সরিষার ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
চাঁচড়া মলংচড়া, সোনাপুরের চাষি শফিক, নিজাম, আজম জানান, প্রতিবছর তারা সরিষার আবাদ করে মোটামুটি লাভবান হচ্ছেন। এ বছর শফিক এক একর জমিতে, নিজাম দেড় একর ও আজম এক একর জমিতে বারী জাতের সরিষার চাষাবাদ করেছেন। ফসন ভালো হয়েছে, সব খরচ দিয়ে লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা।
চাঁদপুর ইউনিয়নের সরিষা চাষি মো. জামাল উদ্দিন বলেন, শ্রমিকের খরচ বেশি হওয়ায় অল্প খরচে এবং কম পরিশ্রমে সরিষা চাষ করে ভালো লাভবান হওয়া যায়। আমি প্রায় ৮০ শতাংশ জমিতে সরিষার চাষ করেছি।সরিষার গাছ ভালো হয়েছে। গাছে প্রচুর ফুল ধরায় আশানুরূপ ফলন পাওয়ার আশা করছি।
তজুমদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন মিয়া বলেন, তেল জাতীয় শস্যের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ব্যাপক প্রচারণা ও প্রণোদনা কর্মসূচি দিয়েছে। কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার, বীজ সরবরাহ করেছেন। প্রকল্পের মাধ্যমে সরিষার প্রদর্শনী বাস্তাবায়নের ফলে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি কৃষি অফিস সব সময় কৃষকদের সহযোগিতা, পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। এ বছর সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছি আমরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঝাপ পোকার আক্রমণ না হলে কৃষক হাসি মুখে ফসল ঘরে তুলতে পারবে এবং লাভবান হবে।
এসপি