অভাবে স্ত্রী-সন্তানকে দিয়ে মই টানাচ্ছেন কৃষক আবু বকর সিদ্দিক

একেকটা মানুষের জীবনের গল্প একেক রকম। কখনও আনন্দ আবার কখনও বেদনা। কারো গল্পটা আবার বিষাদের। তেমনি কষ্টে ভরা গল্প ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের ছোট কাশর এলাকার কৃষক আবু বকর সিদ্দিকের। এক সময় তার সহায় সম্পত্তি থাকলেও এখন অল্প কিছু সম্পদ ভরসা। তবে চাষের জন্য নেই বলদ। তাই স্ত্রী-সন্তানকে দিয়ে মই টানিয়ে প্রস্তুত করছেন ক্ষেত। 

যে কাজটি বলদ কিংবা ট্রাক্টর দিয়ে করানোর কথা সেই কাজটি করছেন কৃষক আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী মমতাজ বেগম এবং ছেলে মাহাদী হাসান সুমনকে দিয়ে। আর এ কাজে সহযোগিতা করছেন আবু বকর সিদ্দিক।

আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ৩৫ শতাংশ জমি ট্রাক্টর দিয়ে হালের কাজ করিয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে কয়েকদিন ধরে ক্ষেতে মই দিতে পারছিলেন না। অনেক জায়গায় টাকা ধার চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। পরে নিরুপায় হয়ে স্ত্রী সন্তানকে দিয়ে মইয়ের রশি টানাচ্ছেন এবং নিজে মইয়ের পেছনে ধরে সহযোগিতা করছেন। 

আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, ৬ সদস্যের সংসারে উপার্জনের লোক নেই। তাই কিছু টাকা বাঁচানোর জন্য স্বামীকে সহযোগিতা করছেন। এই কাজ করাটাকে তিনি গর্ব  হিসেবে মনে করছেন। কারো কাছে টাকা ধার চেয়ে না পাওয়া এবং পেলেও সময় মতো পরিশোধ করতে না পারলে অনেক কথা শুনতে হয়। তাই কারো কাছে মাথা নত না করে নিজের কাজ নিজে করা উত্তম বলে মনে করেন মমতাজ।

তাদের ছেলে মাহাদী হাসান সুমন জানান, সে দশম শ্রেণীর ছাত্র। করোনার জন্য স্কুল বন্ধ। তার বাবা মূলত কৃষক। এখন তার বয়স হয়েছে তাই কাজও ঠিকমতো করতে পারে না। এলাকায় কাজের লোক পেলেও পারিশ্রমিক দিতে হয় বেশি। তাই মাকে নিয়েই কাজে নেমেছেন।

অভাবের তাড়নায় স্ত্রী সন্তানকে দিয়ে মই দেওয়াটা দুঃখজনক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো।

ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নারগিস আক্তার

 

এসপি